প্রতীকী ছবি।
মেয়ের উপর যৌন নির্যাতন চালাতেন সৎবাবা। মা এবং মেয়ে গলা টিপে খুন করলেন তাঁকে। ঘটনাটিকে যদিও প্রথমে তাঁরা অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে সাজাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে পুলিশের জেরার মুখে দু’জনেই নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেন। পুলিশি সূত্রে খবর, মুখোমুখি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করলেও ক্যামেরার সামনে অপরাধের কথা স্বীকার করেননি মা ও মেয়ে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের।
পুলিশ জানিয়েছে, গত দু’মাস ধরে সৎ মেয়ের উপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। নিজের মেয়ের উপর সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েই স্বামীকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন ওই মহিলা। পরিকল্পনায় সঙ্গী করেন তাঁর অত্যাচারিত কন্যাকেও। পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে।
হাওড়ার ডোমজুড়ের এই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির নাম শেখ সালাম। সালামের বয়স ৫৫। ডোমজুড় পুলিশ জানিয়েছে, সালামকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সুলতানা বেগম এবং তাঁর নাবালিকা সৎ মেয়ে। পুলিশ দু’জনকেই ডোমজুড় থানায় আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে দু’জনেই খুনের কথা স্বীকার করায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
ডোমজুড়ের পার্বতীপুরের বাসিন্দা সালাম একটি সোনার দোকানের মালিক। বেশ কিছু বছর ধরে মুম্বইয়ে থাকার পর অতিমারির সময়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। ডোমজুড়েই দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী এবং সৎ মেয়ের সঙ্গে থাকছিলেন তিনি। সুলতানার অভিযোগ, ‘‘মেয়ের উপর যৌন নিগ্রহ করছিল স্বামী। গত দু’মাস ধরে এটা চলছিল। শেষ পর্যন্ত মাথা ঠান্ডা রাখতে পারিনি। আমি এবং আমার মেয়ে ওকে গলা টিপে খুন করেছি।’’
তবে খুন করলেও বিষয়টিকে অন্য ভাবে সাজিয়েছিলেন সুলতানা। বুধবার রাতে খুনের পর প্রথমে প্রতিবেশীদের ঘরে ডাকেন তাঁরা। বিছানার ওপর পড়ে থাকা সালামের দেহ দেখিয়ে বলেন, তাঁদের অজান্তে কেই খুন করেছে সালামকে। পুলিশকে সুলতানার পড়শিরা বলেছেন, সালামের গলায় তখন শ্বাসরোধের কালো দাগ স্পষ্ট ছিল। সুলতানা তাঁদের বলেছিলেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। কেন না বাড়িতে ছিলেন না। সন্ধ্যাবেলায় দু’জন অতিথির বাড়িতে আসার কথা জানিয়ে তাঁদের অন্যত্র যেতে বলেছিলেন সালাম। তাঁরা এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ঘুরে আধঘণ্টা পরে ফিরে সালামকে এই অবস্থায় দেখেন। যদিও পরে পুলিশের জেরার মুখে ভেঙে পড়েন দু’জনেই। খুনের কথা স্বীকার করেন। স্বামীর বিরুদ্ধে কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগও করেন। অভিযোগ সত্যি কি না, তা যাচাই করে দেখছে পুলিশ।