চলছে সংস্কারের কাজ। পুরনো রঙেই সজ্জা (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের (স্থানীয়দের কাছে রাজবাড়ি হাসপাতাল) সংস্কারকাজ চালাচ্ছে। আর এই সংস্কার ঘিরে শহরবাসীর মনে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঐতিহ্যবাহী ভবনটি পূর্ত দফতর যে ভাবে ভেঙে সংস্কার করছে, তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে বিতর্ক দানা বাঁধছে।
আশঙ্কা অমূলক, দাবি করে স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, সংস্কারের কাজ রাজ্য পূর্ত দফতরের বিশেষজ্ঞ ইঞ্জনিয়ারদের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজ চলছে।বর্তমানে ভবনের সামনের অংশে, অর্থাৎ, জরুরি বিভাগের কাজ শুরু হওয়ায় তা চোখে পড়ছে। তাতেই অনেকে এই ঐতিহ্যবাহী ভবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কিত। কয়েক দশক আগে বাম আমলে এ শহরের আর এক ঐতিহ্য ঘড়িবাড়ি প্রোমোটারের থাবায় ধ্বংস হয়ে যায়। সেই উদাহরণ তুলে অনেকের প্রশ্ন, এ বার রাজবাড়ি হাসপাতাল যে ভাবে সংস্কার হচ্ছে, তাতে এর ঐতিহ্যের সঙ্গে আপস করা হচ্ছে না তো?
উত্তরপাড়ার বাসিন্দা, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী দেবব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘ঐতিহ্যশালী রাজবাড়ি ভবন অবিকৃত থাক, এটাই চাইছি। তবে, দৃশ্যতই মুড়িয়ে ভাঙা হয়েছে। জরুরি বিভাগের কাঠের ঝুল-বারন্দা, ওই থাম, কাঠের সিঁড়ি সেই জমিদারি আমলের ইতিহাসের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় আমাদের। সেটাই থাক।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, রাজ্য পূর্ত দফতরের পুরনো ভবন সংস্কারে বিশেষজ্ঞদের তৈরি নক্শা অনুযায়ী এবং তাঁদের তত্বাবধানে পুরো কাজ হচ্ছে। জরুরি বিভাগের সামনের অংশে যে ছ’টি থাম রয়েছে, সেগুলি অক্ষত থাকবে। সেগুলিকে লোহার পাইপ দিয়ে আড়াল করে, ভার লাঘব করে দু’হাজার বর্গফুটের ছাদ পুরো ফেলে নতুন করে করা হবে। কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই বারে বারে ছাদ সংস্কার করা হলেও, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রোগীর শয্যায় জল পড়ছে। নিরাপত্তার প্রশ্নও রয়েছে।
এই কাজে যুক্ত এক বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে রাজ্যে বেশ কয়েকটি বড় ঝড় হয়েছে। আগে ভাবা হয়েছিল, ছাদে লোহার খাঁচা বসিয়ে টিনের ছাউনি দেওয়া হবে। কিন্তু, তাতে ঝড়ে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যেত। তাই এখানে ছাদ পুরোপুরি কংক্রিটের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’