temple

Radhaballav temple: ‘নবরূপে সজ্জিত’ রাধাবল্লভ মন্দিরের পলেস্তারা খসছে

ট্রাস্টের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, রান্নাঘরের ছাদ জীর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্ষায় জল পড়ে। সেই জন্য উনুন সরাতে হয়েছে।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৪০
Share:

এমনই অবস্থা রাধাবল্লভ মন্দিরের। নিজস্ব চিত্র।

বিভ্রান্তি চরমে।

Advertisement

কোথাও এতটুকু সিমেন্টের প্রলেপ পড়েনি। তবে, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন, শ্রীরামপুরের রাধাবল্লভ মন্দির মন্দির ‘নবরূপে সজ্জিত’ হয়েছে। ঘোষণা শুনে আকাশ থেকে পড়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ থেকে এলাকাবাসী। কারণ, মন্দিরের পলেস্তারা খসে পড়ছে। কোনও অংশে বৃষ্টির জলও চুঁইয়ে পড়ে।

ওই ঘোষণা কী ভাবে হল তা নিয়ে চর্চা শুরু হলেও সদুত্তর মেলেনি। বিষয়টি জানিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিচ্ছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। শ্রীশ্রী রাধাব‌ল্লভ জিউ ট্রাস্টের সভাপতি প্রদোষ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকার এই মন্দির সংস্কার করবে বলে শুনেছিলাম। কিন্তু কোনও কাজই হয়নি। নবরূপে সজ্জিত হয়েছে, এই ঘোষণায় আমরা অবাক হয়ে যাই। সরকার বা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, মন্দিরের অবস্থা দেখে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হোক।’’

Advertisement

বছর কয়েক আগে মাহেশে জগন্নাথ মন্দিরকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র তৈরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেইমতো কিছু কাজও হয়। ওই কাজ করছে রাজ্যের পর্যটন দফতর। মঙ্গলবার কলকাতা থেকে জগন্নাথ মন্দির-সহ আশপাশের কয়েকটি মন্দিরের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই তালিকাতেই রাধাবল্লভ মন্দিরের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নবরূপে সজ্জিত প্রাচীন জগন্নাথ মন্দির, রাধাবল্লভ মন্দির, মাসির বাড়ি, জগন্নাথ ঘাট সবক’টারই উদ্বোধন আজ হয়ে গেল। এই কাজগুলো আমরা করে দিয়েছি।’’

ওই তালিকায় রাধাবল্লভ মন্দিরের নাম শুনেই বিভ্রান্তি ছড়ায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি। শ্রীরামপুরের পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌরমোহন দে জানান, জেলাশাসককে তিনি বিষয়টি জানান। জেলাশাসক তাঁকে বলেন, বিষয়টি খোঁজ দেখবেন। স্থানীয় কাউন্সিলর ঝুম মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি মন্দির লাগোয়া জায়গায়। তিনি বলেন, ‘‘রাধাবল্লভ মন্দির সংস্কারের জন্য কাগজপত্র তৈরি থেকে পরিদর্শন— সবই হয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি। জেলাশাসককে বলেছি। উনি বলেছেন, দেখবে‌ন।’’ বুধবার আনন্দবাজারের তরফে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলেও জেলাশাসক একই কথা বলেন। স্থানীয় বিধায়ক সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘‘রাধাবল্লভ মন্দির সংস্কারের কাজ হবে। এটা প্রকল্পের মধ্যেই রয়েছে।’’

ট্রাস্টের সদস্যেরা জানান, ১৭৬৪ সালে কলকাতা নিবাসী নয়নচাঁদ মল্লিক রাধাবল্লভ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের নাম অনুসারে এলাকার নাম হয় বল্লভপুর। নিত্যপুজো, ভোগ হয়। রাস, দোল, মাঘী পূর্ণিমা, ঝুলনযাত্রা প্রভৃতি উৎসবে এখানে বহু মানুষের সমাগম হয়। দূরদূরান্ত থেকে ভক্তেরা আসেন। বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মন্দিরের রং চটে গিয়েছে। উপরের অংশে বটগাছ গজিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ফাটল। চাঙড় খসে পড়েছে। কোনও অংশ অস্থায়ী ভাবে মেরামত করা হয়েছে।

ট্রাস্টের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, রান্নাঘরের ছাদ জীর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্ষায় জল পড়ে। সেই জন্য উনুন সরাতে হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কয়েক বছর আগে প্রশাসনের তরফে মন্দির সংস্কারের কথা শোনা গিয়েছিল। সে জন্য মাপজোকও হয়। নাটমন্দির, ভোগের ঘর-সহ মন্দির সংস্কার, অতিথিশালা, বাগান তৈরির কথা তাঁরা শুনেছিলেন।

সেই সব কাজ করুক সরকার, এটাই চাইছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement