এমন ঘরেই বাস। —নিজস্ব চিত্র।
আকাশে মেঘ দেখলেই বুক কাঁপে যমুনা দাস, ফেলু মালিকদের।
মাথায় ছাদ নেই। ত্রিপল ঢাকা বেহাল ঘরে কোনওমতে বাস। সাঁকরাইলের মাশিলার এই বাসিন্দাদের অভিযোগ, আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকলেও ঘর মেলেনি তবে যোজনার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল আসবে শুনে কিছুটা হলেও ফের আশায় বুক বাঁধছেন যমুনারা।
হাওড়া শহরের সীমা ছাড়ালে শুরু হয় সাঁকরাইল ব্লক। আন্দুল বাসস্ট্যান্ডের কাছে আড়গড়িতে রয়েছে ব্লক অফিস। সেখান থেকে সামান্য দূরত্বে মাশিলা পঞ্চায়েতের গড় মির্জাপুর মান্নাপাড়ায় ছোট একটি ঘরে স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে থাকেন জঙ্গলপুরের কারখানা শ্রমিক ফেলু মালিক। তাঁর কথায়, ‘‘২০২০ সালে আবাস যোজনায় ঘরের জন্য আবেদন করেছিলাম। দু’বার ছবি তুলে নিয়ে গেলেও এখনও ঘর পেলাম কই!’’ ফেলুর স্ত্রীর ক্ষোভ, ‘‘প্লাস্টিকের ছাউনি চুঁইয়ে জল পড়ে ঘরে। আমাদের ঘরটা কি হবে না?’’
মাশিলার গড় মির্জাপুরের বাসিন্দা যমুনা বাগের ঘরের চালের টালি ভেঙেছে হনুমানের তাণ্ডবে। তাঁর অভিযোগ, ২০২০ সালে আবাস যোজনার ঘরের জন্য আবেদন জানালেও ঘর মেলেনি। পরিচারিকার কাজ করে কোনওক্রমে দিন গুজরান হলেও ছাদের ভাঙা টালি সারানোরও সামর্থ্য নেই।
মাশিলার পঞ্চায়েত প্রধান গোরাই খান বলেন, ‘‘২০২০ সাল থেকে এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ আবাস যোজনার ঘর পাননি। আমাদের তরফে যা করার, সব করা হয়েছে।’’ সাঁকরাইলের বিধায়ক প্রিয়া পালের ক্ষোভ, ‘‘এলাকার বহু মানুষ আবাস যোজনার টাকা পাননি। এ ছাড়াও, অনেকে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে ঘর ভেঙে ফেলার পরে পরবর্তী কিস্তি না আসায় বিপাকে পড়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এমন আচরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। কেন্দ্রীয় দল এসে দেখুক, এখানে কোনও দুর্নীতি নেই।’’
এই প্রসঙ্গে বিজেপির হাওড়া জেলা সদর সভাপতি রামপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূল প্রকল্পের নাম দিয়ে চুরি করেছে। বাংলার মানুষ বিচার চান। বিজেপি বাংলার মানুষের হয়ে লড়ছে। কেন্দ্রীয় দল এসে দেখুক দুর্নীতির বহর!’’
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ প্রকল্পে যাঁদের নামে টাকা এসেছে, তা একেবারে সরাসরি উপভোক্তার কাছেই চলে গিয়েছে।’’