ধৃত যুবকদের কাছ থেকে উদ্ধার কার্তুজ এবং আগ্নেয়াস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র।
টাকা দিয়েও চাকরি পাননি। তারই প্রতিশোধ নিতে সিআইডি সেজে প্রতারককে ভয় দেখাতে এসে গ্রেফতার হলেন ছয় যুবক। তাঁদের কাছ থেকে মিলল আগ্নেয়াস্ত্রও। হুগলির রিষড়ার এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়ির সামনে ‘পুলিশ’ লেখা বোর্ড ছিল। সেই গাড়ি আটকে তল্লাশি চালাতেই পাওয়া যায় আগ্নেয়াস্ত্র এবং ভর্তি কার্তুজ। বৃহস্পতিবার রিষড়ার ৩ নম্বর রেলগেটের সামনে থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ সিআইডির পরিচয় দেওয়া ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে তারা।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে নাকা চেকিং চালানোর সময় ৩ নম্বর রেলগেট এলাকায় একটি গাড়িকে আটক করে রিষড়া থানার পুলিশ। গাড়ির ছয় আরোহী নিজেদের সিআইডির আধিকারিক বলে পরিচয় দেন পুলিশকে। তখন তাঁদের পরিচয়পত্র দেখতে চান পুলিশকর্মীরা। শুরু হয় কিঞ্চিৎ কথা কাটাকাটি। বেশ কিছু ক্ষণ পর নিজেদের পরিচয়পত্র পুলিশকে দেখান ওই ছ’জন। কার্ড হাতে নিয়ে এপাশ-ওপাশ করেই পুলিশ বুঝতে পারে যে, সেগুলি নকল। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় ওই ছ’জনকে। অভিযুক্তদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন এবং ৩২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। ধৃত ছ’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে আর এক অপরাধের সন্ধান পান তদন্তকারীরা।
গ্রেফতারি এবং তদন্তের ঘটনা প্রসঙ্গে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক চন্দননগর পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ধৃত ছয় অভিযুক্তের মধ্যে তিন জন অন্ধপ্রদেশের এবং তিন জন পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা। আমরা প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছি, ওই ছ’জনই সিআইডি পরিচয় দিয়ে রিষড়ার বাবুনন্দ প্রসাদ নামে এক জনকে ভয় দেখাতে এসেছিলেন।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, রিষড়ার বাসিন্দা বাবু ওই ছ’জনকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ। ধৃতেরা জানিয়েছেন, তারই প্রতিশোধ নিতে রিষড়ায় আসেন তাঁরা। সিআইডির আধিকারিক বলে নিজেদের পরিচয় দিয়ে হুগলি আসেন তাঁরা।
তদন্তে উঠে এসেছে, আগেও ওই ছ’জন রিষড়ায় এসেছেন। গত অগস্ট মাসের প্রথম দিকে এসেছিলেন বাবুর কাছে। তখন তাঁকে বন্দুকের নলের সামনে ধরে বেধড়ক মারধর করেন। সেই ঘটনার পর বাবুনন্দ রিষড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত ছ’জনকে শুক্রবার শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারকের নির্দেশে তাঁদের হেফাজতে নিয়েছে রিষড়া থানার পুলিশ।