কোনও জিনিসই যে ফেলে দেওয়ার নয়, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন শ্রীরামপুরের এক বাসিন্দা। কাচের বোতল, মাটির টালি, মেঝের টাইলস বা দরজা-জানলার কাচ— ফেলে দেওয়া এমন সব ‘অপ্রয়োজনীয়' জিনিস দিয়েই একের পর এক বাদ্যযন্ত্র তৈরি করছেন সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ রাজ্যের পাশাপাশি ভিন্ রাজ্যেও বাহবা কুড়োচ্ছে তাঁর সৃষ্টি।
সোমনাথের বাবা নীরদবরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন গত শতকের পাঁচ ও ছয়ের দশকের নামী সঙ্গীত পরিচালক। সঙ্গীতচর্চার পাশাপাশি নতুন বাদ্যযন্ত্র আবিষ্কারের ঝোঁকও ছিল তাঁর। সোমনাথ বলেন, ‘‘বাঁশ দিয়েও বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেছেন বাবা। সেটির নাম ছিল ‘বাঁশ তরঙ্গ’।’’
বাবার মৃত্যুর পর কাজকর্মের চাপে টানা ৩০ বছর বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে যোগই ছিল না সোমনাথের। হঠাৎই এক দিন ওই ‘বাঁশ তরঙ্গ’টি বাজিয়ে ফেলেন। এর পর ঝোঁকের বশে পুরনো জিনিস দিয়ে বাদ্যযন্ত্র তৈরিতে মেতে ওঠেন তিনি। ২০১৫ সালে মেঝের টাইলস পড়ে যাওয়ার শব্দে চমকে ওঠেন সোমনাথ। তার পর নানা মাপে টাইলস কেটে তৈরি করেন ‘টাইলস তরঙ্গ’। এ ভাবেই নারকেল মালা, কাচ, গ্রিলের টুকরো থেকে একের পর এক বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেছেন। সে যন্ত্রগুলির বাজনা শুনিয়েছেন একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানেও।
নেটমাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির খবর জানতে পেরে সেগুলি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করে একাধিক অনলাইন সংস্থা। বাধ্য হয়েই চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের শিল্পকর্মকে বাণিজ্যিক রূপ দেন তিনি। সোমনাথ বলেন, ‘‘ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা এবং সকলের সামনে তা বাজানোর আনন্দই আলাদা!’’