পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এক বছর আগেই জেটি মেরামতির জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়েছিল। —ফাইল চিত্র।
পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের জন্য গঙ্গা থেকে জল তোলার মূল জেটি সংস্কার ও পাম্প হাউস তৈরি করার অনুমতি এত দিন দিচ্ছিলেন না শিবপুর বটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৬ মাস ধরে বারবার আবেদন করেও পরিবেশ দূষণ-সহ নানা সমস্যার কথা তুলে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে এই কাজ শুরুর অনুমতি মেলেনি। অবশেষে শর্তসাপেক্ষে ওই কাজের অনুমতি দিল শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন। প্রায় ৩০ কোটি টাকা খরচে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) শীঘ্রই ওই কাজ শুরু করবে। হাওড়া পুরসভা ও কেএমডিএ জানিয়েছে, এই কাজে বটানিক্যাল উদ্যানের কোনও ক্ষতি হবে না।শুধুমাত্র জেটি সংস্কার করে তা আধুনিক মানের করা হবে।
প্রায় ৬ মাস ধরে বার বার এই আবেদন খারিজ করার পরে গত মাসে জয়েন্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি অব বটানিক্যাল গার্ডেনের চেয়ারম্যান এবং রাজ্যের মুখ্য সচিব এ বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক ডাকেন। সেখানেই বরফ গলে। মঙ্গলবার বটানিক্যাল গার্ডেনের জয়েন্ট ডিরেক্টর দেবেন্দ্র সিংহ জানান, কোনও মতেই দূষণ নয় এবং গার্ডেনের ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে— এই শর্তে কেএমডিএ-কে এই কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের মুখ্য সচিব খোদ এই কাজটি করতে দিতে বলায় আমরা কাজ শুরু করতে বলেছি। তবে গার্ডেনের ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’’ হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, সব শর্ত মেনেই কাজ শুরুকরছে কেএমডিএ।
গঙ্গার জলস্তর যে ভাবে কমছে, তাতে আগামী দিনে গঙ্গা থেকে জল না তুলতে পারলে গোটা হাওড়া জুড়ে তীব্র জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে। তাই কলকাতার মতো পুরনো জেটির সংস্কার করে তার উপরে পাম্প হাউস তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, বটানিক্যাল উদ্যানের উত্তর প্রান্তের গঙ্গা থেকে পদ্মপুকুর প্রকল্পের জল তোলার আলাদা একটি জেটি রয়েছে, যার নাম ইনটেক জেটি। তার পিছনে, অনতিদূরেই পাম্প হাউস থেকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন চারটি পাম্প দিয়ে জল তুলে তা পাঠানো হয় দানেশ শেখ লেনের মূল জলপ্রকল্পে। এর পরে সেখানে জল শোধন করে হাওড়ায় সরবরাহ করা হয়। পুরসভার সূত্রের খবর, বছরখানেক আগে একটি জাহাজের ধাক্কায় ওই ইনটেক জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলের নীচের লোহার খাঁচাটি নড়বড়ে হয়ে যায়। এ ছাড়া জেটি থেকে লোহা চুরি যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।
হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরসভার তত্ত্বাধানে কেএমডিএ এই কাজ করছে। উদ্যান কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, উদ্যানের এক ইঞ্জি জমি বা গাছপালার ক্ষতি করা হবে না। এই কাজের জন্য এক বছরের বেশি সময় দিতেরাজি ছিলেন না উদ্যান কর্তৃপক্ষ। কেএমডিএ তাতেই রাজি হয়েছে।’’ কেএমডিএ-র এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘কলকাতার মতো হবে এই জেটিটি। কাজ শেষ হলে কোনও সময়েই গঙ্গা থেকে জল তুলতে সমস্যা হবে না।’’