Chinsurah Municipality

চুঁচুড়ায় বন্ধ ২ পরিষেবা, পুর-তহবিল নিয়ে প্রশ্ন

একের পর এক পরিষেবা বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন শহরের বাসিন্দারা। প্রতিদিন ওই শ্মশানে মৃতদেহ নিয়ে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই।

Advertisement

সুদীপ দাস

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ১০:০৩
Share:

চুঁচুড়ার একমাত্র শ্মশান বন্ধ। ছবি: তাপস ঘোষ

টানা কয়েক মাস ধরে অস্থায়ী কর্মীদের মজুরি সময়ে মিলছে না। কারণ হিসেবে পুর কর্তৃপক্ষ অর্থাভাবের কথা জানিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে শবদেহ সংরক্ষণ কেন্দ্র ‘পিস হেভেন’। পুরসভার চারটির মধ্যে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। একই সঙ্গে গত ৭ জুন থেকে যান্ত্রিক গোলযোগে বন্ধ পড়ে
রয়েছে শ্যামবাবুর শ্মশানঘাটের বৈদ্যুতিক চুল্লি।

Advertisement

একের পর এক পরিষেবা বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন শহরের বাসিন্দারা। প্রতিদিন ওই শ্মশানে মৃতদেহ নিয়ে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই। কেউ কেউ আবার দেহ সংরক্ষণের ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসে গোমড়া মুখে ঘরে ফিরছেন। পুরসভার ভাঁড়ার কি সত্যিই শূন্যের পথে, উঠছে প্রশ্ন। পুরকর্মীদের একাংশ এবং বিরোধীরা তেমনই দাবি করছেন।

প্রয়োজনের তুলনায় অধিক অস্থায়ী কর্মী থাকায় মজুরি দিতে ঝক্কি পোহানোর কথা স্বীকার করলেও অর্থাভাবে পরিষেবাগুলি বন্ধের দাবি উড়িয়েছেন পুরপ্রধান অমিত রায়। তিনি বলেন, ‘‘যান্ত্রিক সমস্যা স্বাভাবিক ব্যাপার। মেরামতে খানিক সময় লাগতেই পারে। বৈদ্যুতিক চুল্লি মেরামতের জন্য নিয়ম মেনে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। শীঘ্রই তা
সারানো হবে। বাকি পরিষেবাও শীঘ্রই ঠিক করা হবে।’’

Advertisement

পুরপ্রধান যা-ই দাবি করুন, কর্মীদের একটি বড় অংশ বলছেন, কোষাগারের ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ অবস্থা। এ হেন পরিস্থিতিতে যত দিন যাবে, ততই আর্থিক সঙ্কট প্রকট হবে। অবিলম্বে পুরসভা
আয় বাড়ানোর ব্যবস্থা না করলে যাবতীয় পুর পরিষেবাই পরপর বিঘ্নিত হতে থাকবে।

পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সমীর মজুমদার বলেন, "ভোট রাজনীতির জন্য লাগাতার অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা
বাড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড। এখন তাঁদের মজুরি জোগাতেই অন্য পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে।" বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের ঘরের লোকদের কাজে ঢুকিয়ে ভাঁড়ারে টান পড়বে আর পুরসভার আয় নেই বলে হাত তুলে দিলে চলবে না। মানুষের কাছে মাথা নত করে অযোগ্য কর্তৃপক্ষের সরে দাঁড়ানো উচিত।"

কিন্তু কেন এমন হাল?

পুরসভার সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই দাবি, প্রতি মাসে বিপুল সংখ্যক অস্থায়ী কর্মীর মজুরি মেটাতেই কালঘাম ছোটে কর্তৃপক্ষের। সময় পেরোলেই চলে বিক্ষোভ-আন্দোলন। ফলে, কর্মীদের বেতন মেটানোর জন্য চাপে থাকেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাই ইচ্ছা থাকলেও অন্য কোনও খাতের খরচ সামলাতে বেগ পেতে হয় পুরসভাকে।

পুরসভা সূত্রের খবর, প্রায় ২২০০ অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন এখানে। তাঁদের প্রাত্যহিক মজুরি ন্যূনতম ২৭০ টাকা। এঁদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জনের মজুরি দেয় রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থা (সুডা)। বাকি প্রায় ১৬০০ জনের মজুরির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় পুরসভা থেকে। সঙ্গে রয়েছে পেনশন। সুডা-র টাকা ধরে পুরসভা থেকে মাসিক মজুরি ও পেনশনের জন্য ব্যয় হয় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। কিন্তু পুরসভার মাসিক আয় মাত্র ৭০ লক্ষ টাকার মতো। মিউটেশন বাবদ অতিরিক্ত আয় হলে সেই টাকা দিয়েই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement