বর্ষবরণের রাতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ভাঙচুর! তছনছ করা হয় আসবাবপত্র। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের আগের রাতে দলের কার্যালয়ে ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল হুগলির ব্যান্ডেলের বালিকাটা এলাকায়। এ নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই শিবিরের মধ্যে চলছে চাপান-উতোর। তবে পুলিশের দাবি ভিন্ন।
শনিবার, বর্ষবরণের রাতে বালিকাটায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে আচমকা ভাঙচুর শুরু হয়। অফিসের জানালার কাচ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ভাঙা হয় চেয়ার-টেবিল থেকে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম। এই খবর পেয়ে রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার।
তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ, এই অশান্তি এবং ভাঙচুরের কাজ করেছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘‘যাদের পায়ের তলার মাটি নেই, সেই সিপিএমকে মানুষ বাংলা থেকে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিয়েছে। এখন একটি সাম্প্রদায়িক দল এই সব করছে। আমাদের দলের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি, বিরোধীদের রাজনৈতিক কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। বিরোধীদের কাজ করার সুযোগ দিচ্ছি। কিন্তু ওদের লোকজন নেই। তাই অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে।’’ এর পর তাঁর হুঙ্কার, ‘‘পনেরো মিনিটে চুঁচুড়া বিধানসভার সব বিজেপি অফিস বন্ধ করে দিতে পারি।’’
ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্য প্রসঙ্গে তাঁদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ‘‘বিধায়ককে চব্বিশ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। বিজেপির অফিস বন্ধ করে দেখিয়ে দিন।’’
অন্য দিকে, বিধায়কের দাবি, তাঁর দল দুর্বল নয়। তাঁর দলের জন্মদিনে পার্টি অফিসে ভাঙচুর হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘‘বিধায়ককে পনেরো মিনিট নয়, চব্বিশ ঘণ্টা সময় দিলাম। একটা পার্টি অফিস বন্ধ করে দেখিয়ে দিন।’’ পাশাপাশি পার্টি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় সুরেশের অভিযোগ, চুঁচুড়া বিধানসভা উত্তপ্ত হয় কেবল মাত্র বিধায়ক এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের জন্য। তাঁর কথায়, ‘‘বালিকাটায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা কেবল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। এরা দায় এড়াতে এখন বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে।’’ বিজেপি নেতার দাবি, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পাওয়ার লড়াইয়ে নেমেছেন তৃণমূলের লোকজন। তাই নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন তাঁরা।
এই ভাঙচুরের ঘটনায় সুরজ শামি নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে ব্যান্ডেল ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়নি। শনিবার বর্ষবরণ পালন করে মদ্যপ অবস্থায় দুই যুবকের বচসার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।