হাওড়ার ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছবি। —নিজস্ব চিত্র।
বস্তাবন্দি চাল এবং ডালে থিক থিক করছে কালো পোকা। সেই চাল দিয়েই চলছে শিশুদের খাবার রান্না। এমনই ছবি দেখা গেল হাওড়ার চামরাইলের দক্ষিণ পাড়া এলাকায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
গত কয়েক বছর ধরে ডোমজুড়ের চামরাইল দক্ষিণপাড়ায় একটি ঘরের মধ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলছে। সেখানে তিন থেকে ছয় বছরের শিশুদের পড়াশোনা, খেলাধুলোর পাশাপাশি নিয়মিত খাবার দেওয়া হয়। একই সঙ্গে গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা মহিলারাও ওই কেন্দ্র থেকে খাবার নিয়ে যান। পুনম চৌধুরী নামে এক অভিভাবক আরও বেশ কয়েক জন অভিভাবকদের নিয়ে অভিযোগ করেছেন, কয়েক দিন ধরে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পোকা ধরা চাল-ডাল দিয়ে খাবার তৈরি করা হচ্ছে। শিশুরা ওই খাবার খেয়ে যে কোনও সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। অভিভাবকদের অভিযোগ, খাবারের মানও এমন যে, অনেক সময় খাবার বাড়িতে নিয়ে গেলেও শিশুদের খাওয়ানোর সাহস পান না তাঁরা। পথকুকুরদের খাইয়ে দেন ওই খাবার।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিক্ষিকা এবং রাঁধুনি দু’জনেই চাল-ডালে পোকা থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। শিক্ষিকার যুক্তি, এক সঙ্গে আড়াই মাসের চাল এবং ডাল জমিয়ে রাখা হয়েছে। এর ফলে পোকা ধরে গিয়েছে তাতে। তিনি বলেন, ‘‘চাল-ডাল রোদ্দুরে সেঁকে নেওয়ার পর রান্না করলেও ভাত ও ডালে পোকা থেকে যাচ্ছে। পরে ছাঁকনি দিয়ে ওই পোকাগুলোকে তুলে নেওয়া হয়।’’
এই ঘটনার কথা চাউর হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ডোমজুড় ব্লকের চাইল্ড প্রজেক্ট ডেভেলপমেন্ট অফিসের আধিকারিকরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। প্রকল্পের জন্য সুপারভাইজারের দায়িত্বে রয়েছেন বর্ণিকা নায়েক। তিনি বলেন, ‘‘পুরনো স্টকের চাল-ডালে পোকা ছিল। কেন তা শিশুদের খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা জানতে শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁর গাফিলতি রয়েছে। তবে শিশুরা যাতে ভাল খাবার পায়, তা দেখা হবে।’’