Howrah

Howrah: মাঝ রাতে পুলিশের বেশে চার আগন্তুক, তার পরেই হাওড়ায় রহস্যমৃত্যু ছাত্রনেতার

জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) আন্দোলন-সহ বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিলেন আনিস। সম্প্রতি তিনি আইএসএফ দলে যোগ দিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:১৭
Share:

খুনের নেপথ্যে কারা, হত্যার কারণ কী? নিজস্ব চিত্র।

গভীর রাতে পুলিশের পরিচয় দিয়ে বাড়িতে ঢুকে এক ছাত্রনেতাকে খুনের অভিযোগ উঠল হাওড়ার আমতা থানা এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল আমতার সারদা দক্ষিণ খাঁ-পাড়ায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম আনিস খান (২৮)। পুলিশের পোশাকে বাড়িতে গিয়ে আনিসকে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলে খুনের অভিযোগ তুলেছে তাঁর পরিবার। যদিও আমতা থানার দাবি, তারা ওই বাড়িতে কোনও পুলিশ পাঠায়নি। তবে পুলিশের পোশাকে কারা গিয়েছিল আনিসের বাড়িতে? আইএসএফ নেতার অকাল মৃত্যুতে ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। শুরু রাজনৈতিক চাপানউতর।

Advertisement

মৃত আনিসের পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে পুলিশের পোশাক পরিহিত চার জন লোক আসেন বাড়িতে। এঁদের তিন জন সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক জন খাকি পোশাকে ছিলেন। খাকি পোশাক পরিহিত নিজেকে আমতা থানার অফিসার পরিচয় দিয়ে আনিসের বাবাকে আটকে রাখেন। বাকিরা আনিসকে নিয়ে তাঁরা তিনতলায় চলে যান। তার পর ছাদ থেকে কিছু পড়ার শব্দ পান পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

পরিবার সূত্রে খবর, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আনিস কলকাতাতেই থাকতেন। তিন দিন আগে বাড়িতে ফিরেছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় পাড়ার একটি জলসায় যান তিনি। এর পরে গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন। বাড়ি ফেরার কিছু ক্ষণ পরে চার জন ওই বাড়িতে উপস্থিত হন। ওই চার জনের মধ্যে এক জন পুলিশের পোশাক পরা থাকলেও বাকিদের শরীরে জলপাই রঙের পোশাক পরা ছিল বলে মৃতের পরিবার সূত্রে দাবি।

রাত একটা তখন। তাঁরা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গ্রিল ধরে জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। আওয়াজ শুনে আনিশের বাবা গেটের সামনে এসে তাঁদের পরিচয় জানতে চাইলে নিজেদের আমতা থানার পুলিশ বলে দাবি করেন তাঁরা। জানান, আনিসকে খুঁজতে এসেছেন।

গেট খোলা হলে আনিসের বাবাকে পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তি বন্দুক দেখিয়ে ওখানেই আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। এর পর বাকি তিন জন বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করেন। তাঁরা সিঁড়ি দিয়ে তিন তলায় উঠে যান। তিন তলার সিঁড়ির ঘরের বারান্দার সামনে চৌকিতে বসে ছিলেন আনিস। তাঁরা উপরে এসে আনিসকে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, তাঁকে তিন তলার বারান্দা থেকে নিচে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়।

আনিসের পরিবারের দাবি, কিছু ক্ষণ পরেই সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নীচে নেমে ওই পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তিকে ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করে বাকি তিন জন বলেন, ‘স্যর কাজ হয়ে গিয়েছে।’ দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তাঁরা।

এর পর পরিবারের অন্যান্যরা ছুটে গিয়ে দেখেন মাটিতে পড়ে রয়েছেন আনিস। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়।

ঠিক কী কারণে তাঁদের ছেলের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটল তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁর পরিবারের লোকেরা। তবে তাঁদের দাবি, যাঁরা গত কাল রাতে এসেছিলেন, তাঁরা আদতে পুলিশ না অন্য কেউ এর তদন্ত হোক। ছেলেকে খুনের বিচার চান তাঁরা।

পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) আন্দোলন-সহ বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিলেন আনিস। বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত থাকার কথাও জানান পরিবারের সদস্যরা। অতি সম্প্রতি আইএসএফ দলে যোগ দিয়েছিলেন। সে কারণে এই ঘটনা কি না, সে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement