বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় জিরাটের সভা থেকে অভিযোগ করেন, তৃণমূলের নানা কর্মসূচি আসলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে একটা কৌশল। —নিজস্ব চিত্র।
অভিযোগ না শুনলে ‘দিদির দূত’দের ঘরে বেঁধে রাখার নিদান দিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এ রকম কর্মসূচি করে ‘মিথ্যাচার’ করছে তৃণমূল। সাংসদের এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
রবিবার হুগলির জিরাটের সভায় লকেট বলেন, ‘‘দিদির দূত আসছে। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত এই দূতেরা। তাঁরা আবার গিয়ে মানুষের অসুবিধা দেখছেন! অসুবিধার কারণ তো ওঁরাই। এঁরাই চোর-ছ্যাঁচড়।’’ সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপকুরের ঘটনা উল্লেখ করে বিজেপি সাংসদের কটাক্ষ, ‘‘তাঁরা (তৃণমূল নেতৃত্ব) আবার চড়-থাপ্পড়ও মারছেন! কিন্তু চড়-থাপ্পড় মারলে আপনারা ছেড়ে দেবেন না।’’ এর পর মঞ্চের সামনে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে লকেটের মন্তব্য, ‘‘ওঁদের চড়-থাপ্পড়ের দরকার আছে। মানুষের কোটি কোটি টাকা লুট করবেন, আবার চড়ও মারবেন, হয় না। যদি অভিযোগ শুনতে না চান (দিদির দূত), তাঁদের ঘরে বেঁধে বসিয়ে রেখে অভিযোগ শোনান। তাঁদের সরকার, তাঁদের পঞ্চায়েত। তাঁরা কেন মানুষের কাজ করবেন না?’’
উল্লেখ্য, শনিবার দত্তপুকুরের ‘দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি’তে অভিযোগ জানাতে গিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীর কাছে থাপ্পড় খেতে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা জনৈক সাগর বিশ্বাসকে। ওই ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী রথীন ঘোষ। এ নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সেই প্রসঙ্গ তুলে লকেট বলেন, ‘‘আমি সামনে থাকলে তাঁকে (তৃণমূল নেতা) চারটে থাপ্পড় মারতাম। যারা লুট করেছে রুখে দাঁড়ান। ‘দিদির দূত’, ‘দিদিকে বলো’, ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ প্রকল্পকে ‘বহুরূপী প্রকল্প’ বলেন লকেট। তাঁর কথায়, ‘‘এক রূপ ঘুরে ঘুরে আসছে। ঘুরে ঘুরে দুর্নীতিগ্রস্ত। এরা পঞ্চায়েত ভোটের আগে মিথ্যাচার করতে আসছে। ভোট লুট করার জন্য মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে।’’
বিজেপি সাংসদের এই ‘বেঁধে রাখুন’ মন্তব্য ঘিরে শোরগোল শুরু হয়েছে জেলায়। এই প্রেক্ষিতে লকেটকে কটাক্ষ করেছেন গত বিধানসভা ভোটে তাঁকে হারানো তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। লকেটকে ‘দিলীপ ঘোষের যোগ্য শিষ্যা’ বলে বিঁধেছেন তিনি। প্রায় ১৪ হাজার ভোটে লকেটকে হারানো অসিত আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন,‘‘লকেটদেবী দিলীপ ঘোষের (বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি) ভাষায় কথা বলছেন। দিলীপ যেমন কথায় কথায়, ভেঙে দেওয়া, মেরে ফেলার নিদান দেন, লকেটদেবীও সেই পথে হাঁটছেন। আসলে এটাই বিজেপির সংস্কৃতি।’’ তৃণমূল বিধায়কের যুক্তি, ‘‘আসলে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’, ‘দিদির দূত’-এর মতো কর্মসূচি দেখে ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই এ রকম কুমন্তব্য করছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়রা।’’