চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে সরঞ্জাম নিয়ে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
এতদিন চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ শোনা গিয়েছে। হাসপাতালের গেটের সামনে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার থেকে সেখানে সর্বক্ষণের পুলিশ মোতায়েন করা হল। এতে নিরাপত্তা বাড়বে বলেই মনে করছেন রোগীদের আত্মীয়েরা। গণপিটুনির ঘটনায় ধৃত এক মহিলা-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃতদের বুধবার চন্দননগর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, হাসপাতালে সর্বদা পুলিশ থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালের সুপার সন্তু ঘোষ বলেন, ‘‘আপাতত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সর্বদা পুলিশ থাকলে ভাল হয়।’’
মঙ্গলবার এক বন্ধুকে নিয়ে মোটবাইকে দিল্লি রোডের দিক থেকে ফিরছিলেন ভদ্রেশ্বরের বিঘাটির বাসিন্দা সুপ্রিয় সাঁতরা। ভদ্রেশ্বর স্টেশনের কাছে নেতাজি পল্লির বাসিন্দা গৌতম দাসের সঙ্গে বাইকটির ধাক্কা লাগে। দু’পক্ষ হাতাহাতিতে জড়ায়। পড়ে গিয়ে মাথা ফাটে গৌতমের। সুপ্রিয়রাই তাঁকে বাইকে চাপিয়ে চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে গৌতমের প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন সুপ্রিয়। তখনই গৌতমের আত্মীয় অপর্ণা রায়ের (ধৃত) সঙ্গে দেখা হয় সুপ্রিয়র। অপর্ণাকে চা খাইয়ে, গৌতমের ওষুধ কিনে দিয়েও নিস্তার মেলেনি তাঁর। অপর্ণা এবং আরও কয়েকজন সুপ্রিয়কে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই সুপ্রিয় মারা যান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রাজু পরামানিক হাসপাতালের গেটে দাঁড়িয়ে চা-বিস্কুট বিক্রি করেন। তাঁর কথায়, ‘‘মঙ্গলবার তখন বেলা
সওয়া তিনটে হবে। উল্টো দিকের একটি চায়ের দোকানে ওঁরা চা খাচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখলাম যুবকটি (সুপ্রিয়) করজোড়ে এক মহিলার সামনে ভুল স্বীকার করছেন। চিকিৎসার খরচ দিতে চাইছেন।
কিন্তু মহিলা তাঁর গালে চড় মেরে চলেছেন। এরপর কয়েকজন যুবক এসে টানা ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ওই যুবক।" রাজুর আক্ষেপ, ‘‘ঝড়ের গতিতে ঘটনাটা ঘটে গেল। কেউ এগিয়ে যাওযার সময়ই পেলাম না। হাসপাতালে ঢোকাতেই চিকিৎসক যুবককে মৃত বলে জানান।’’