লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে রয়েছে জিনিসপত্র। নিজস্ব চিত্র।
ফিটফাট পোশাক। গায়ের রঙ ফরসা। মার্জিত চেহারা। মধ্য তিরিশের যুবককে দেখে দেখে সন্দেহ হওয়ার কথা নয়। উত্তরপাড়ার একটি আবাসনের বাসিন্দাদেরও তা হয়নি। পরে ফ্ল্যাটের চাবি ভাঙা দেখে তাঁরা ‘চোর, চোর...’ বলে চিৎকার করতেই আপাত ভদ্র চেহারার আগন্তুক দে দৌড়। যদিও, শেষরক্ষা হয়নি। স্থানীয়দের হাতে সে ধরা পড়ে যায়। থানার অদূরে উত্তরপাড়া বাজার লেনে দিন তিনেক আগের ঘটনা। ওই যুবক এখন শ্রীঘরে।
তবে, এই শহরে চুরিতে লাগাম পড়েনি। বুধবার ফের একটি ফাঁকা বাড়িতে চুরি হয়। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চুরি লেগেই আছে এখানে। ধারাবাহিক চুরি শুরু হয়েছিল টোটো আর রিক্শা দিয়ে। তারপরে অভিজাত আবাসনে। বেশির ভাগ চুরির ঘটনা ঘটেছে ফাঁকা ফ্ল্যাটে। পরের পর ঘটনায় আবাসনের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। একটি ক্ষেত্রে ছাড়া পুলিশ দুষ্কৃতীদের ধরতে পারেনি। আতঙ্কিত শহরবাসীর অভিযোগ, চোরের দল থানা তথা চন্দননগর কমিশনারেটের পরিকাঠামোর হাল বেআব্রু করে দিয়েছে।
বুধবার রাতে আর কে স্ট্রিটে তিন তলা একটি ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে তিনটি আলমারি ভেঙে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির গাড়িচালক এসে দেখেন, প্রধান দরজার তালা ভাঙা। খবর যায় পুলিশে। দুষ্কৃতী অবশ্য অধরাই।
গত ২৪ নভেম্বর উত্তরপাড়া স্টেশন লাগোয়া একটি অভিজাত আবাসনে এক রাতে সাতটি ফাঁকা ফ্লাটে চুরি হয়। চলতি মাসের ১২ তারিখে বি কে স্ট্রিটে একটি বাড়িতে চুরি হয়। তার পরে দিনের বেলায় বাজার লেনের একটি ফ্ল্যাটে চুরি হয়। ওই ঘটনাতেই এক দুষ্কৃতী এলাবাসীর হাতে ধরা পড়ে। স্থানীয়দের প্রশ্ন, এক দুষ্কৃতীকে ধরে দেওয়ার পরেও বাকিদের পুলিশ কেন ধরতে পারল না?
পরপর চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত উত্তরপাড়াবাসী শহরে ফের নৈশ প্রতিরোধ বাহিনী কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছেন। কোতরংয়ের একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা বিজন দাস বলেন, ‘‘এখন বহু মানুষ আবাসনে থাকে। আগের মতো পাড়া বিষয়টা নেই। বাইরের লোক সম্পর্কে মানুষ খোঁজখবর রাখেন না। এই অবস্থায় চুরি ঠেকাতে মনে হচ্ছে রাত পাহারার পথে ফিরতে হবে। কারণ, এলাকার তুলনায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম, এটাও ঘটনা।’’ চন্দননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘উত্তরপাড়ার চুরির কিনারা করতে পুলিশ চেষ্টা করছে। আশা করছি, দ্রুত ফল মিলবে। কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। তল্লাশিও চলছে।’’