রাস্তার কাজে মিলেছে ছা়ড়পত্র। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট আসছে। হুগলির নানা গ্রামে রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ বিস্তর। দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে সেই ক্ষোভের আঁচ পেয়েছেন ‘দিদির দূতেরা’। অবশেষে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে জেলার মোট ৪৭৩টি রাস্তা নতুন করে তৈরি বা সংস্কারের জন্য ছাড়পত্র মিলল। তবে, এখনও টাকা বরাদ্দ হয়নি। এর পাশাপাশি, কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকাতেও রাস্তা হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত দফতর যে সব রাস্তার কাজের ছাড়পত্র দিয়েছে, তার মধ্যে ৪২৩টি রূপায়ণ করবে সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনগুলি। বাকি ৫০টি রাস্তা রয়েছে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে। জেলা পরিষদই সেই কাজ করবে। কোন ব্লকের কোন পঞ্চায়েতের কী কী রাস্তা হবে সেই তালিকা রবিবার জেলা এবং ব্লকগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার সংখ্যা এবং দৈর্ঘ্য উল্লেখ করে সেগুলি রূপায়ণের আনুমানিক খরচ দ্রুত পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের রাস্তাগুলির দৈর্ঘ্য এক কিমি থেকে দেড় কিমি। আর পঞ্চায়েতের রাস্তাগুলির দৈঘ্য ৪০ মিটার থেকে সর্বোচ্চ দেড় কিমি।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ব্লকে সব মিলিয়ে হাজারের উপরে রাস্তার কাজের দাবি রয়েছে। আপাতত ৪৭৩টি কাজের ছাড়পত্র মিললেও বাকিগুলির বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শান্তনু বালা বলেন, “আপাতত সদ্য ছাড়পত্র পাওয়া রাস্তাগুলির জরিপের কাজ আমরা শুরু করেছি। খরচের হিসাব এবং কারিগরি অনুমোদন পর্ব সেরে দফতরে পাঠানো হবে। অনুমোদন দিলেই কাজ শুরু হবে। আরও কিছু রাস্তা হবে। সেই তালিকাও আসছে।”
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গ্রামীণ সব রাস্তার কাজ দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যে করে ফেলতে হবে বলে নির্দেশ এসেছে। তহবিল বরাদ্দ হবে রাজ্যের নিজস্ব তহবিল থেকে। কাজগুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তুলতে যথাযথ পরিকাঠামো গড়ার নির্দেশিকা আগেই ব্লকগুলিতে পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, ব্লক এবং জেলা পরিষদের কাজগুলির প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য জেলা, মহকুমা এবং ব্লকে নিযুক্ত ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ও পঞ্চায়েত স্তরের নির্মাণ সহায়কদের নিয়োগ করতে।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সড়ক যোজনার খাতে পাঁচ কোটি বকেয়া টাকা ইতিমধ্যেই হুগলি জেলা প্রশাসন পেয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে সেই টাকাও আলাদা ভাবে রাস্তার কাজে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জেলা পরিষদ কাজে লাগাতে চাইছে। হুগলির প্রত্যন্ত এলাকার একটি পঞ্চায়েতের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েতে ৭-৮টি ছোট রাস্তার কাজ বকেয়া রয়েছে। সবই কংক্রিটের। এই কাজের আনুমানিক খরচ ২০ লক্ষ টাকার বেশি নয়। টাকা ঢুকলেই এক মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।
জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, জেলার ১৮টি ব্লকে কম-বেশি ৭০টি সড়কের কাজ হবে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায়। সেই কাজের প্রক্রিয়াও বিধি অনুয়ায়ী এগিয়ে রাখা হয়েছে। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের ২০টি রাস্তার ৩৬ কিলোমিটারের দরপত্র হয়ে গিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, অন্তত ১০০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ করা।’’