প্রতীকী ছবি
হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে দিনের পর দিন জমে রয়েছে হাঁটু সমান জল। জমা জলের নীচে তৈরি হয়েছে গর্তের মরণফাঁদ। প্রায়ই ওই সব গর্তে মানুষ পড়ে জখম হচ্ছেন। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হচ্ছে না, এই অভিযোগে এ বার রাস্তা অবরোধ করল সিপিএম। সোমবার সকালে দলের পশ্চিম হাওড়া এরিয়া কমিটির তরফে ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসের চ্যাটার্জিপাড়া মোড় অবরোধ করা হয়। আধ ঘণ্টা অবরোধের পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়।
গত কয়েক দিনের মধ্যে জমা জলের প্রতিবাদে একাধিক বার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন টিকিয়াপাড়ার নোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। গত শুক্রবার অবরোধের পরে পাম্প বসিয়ে ট্যাঙ্কারে করে জল তুলে ফেলার কাজ শুরু করে নিকাশি বিভাগ। কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধানে পুরসভা যে ব্যর্থ, সোমবারের বৃষ্টির পর তা ফের সামনে আসে। এ দিনের বৃষ্টির পরে ফের জমা জল বেড়ে যায় নোনাপাড়ায়।
এই জমা জল ও খারাপ রাস্তার প্রতিবাদে সিপিএমের পক্ষ থেকে নোনাপাড়ার কাছে চ্যার্টাজিপাড়া মোড় অবরোধ করা হয়। অবরোধকারীদের অভিযোগ, নটবর পাল রোড, বেনারস রোড, ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাস, মাকড়দহ রোড দীর্ঘদিন ধরেই ভেঙেচুরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যাচ্ছে দাশনগর, বালিটিকুরি, সিটিআইয়ের মতো এলাকায়। সেই জল সহজে নামছে না। এ ছাড়া ৬, ৭, ৮, ৯, ৪৩, ৪৭, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডেও বাসিন্দাদের বাড়িতে নর্দমার নোংরা জল ঢুকে রয়েছে বেশ কিছু দিন ধরে।
এ দিন অবরোধে নেতৃত্ব দেন সিপিএমের হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য অনন্ত সাঁতরা। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তা ও নিকাশির বেহাল অবস্থার কথা প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও কোনও ফল না হওয়ায় আমরা পথে নেমেছি।’’ ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধের জেরে তীব্র যানজট তৈরি হয় এ দিন। হাওড়া ও কলকাতাগামী সমস্ত গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুললে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ দিকে, এ দিনই হাওড়ার জমা জলের সমস্যা নিয়ে সেচ দফতর ও কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, হাওড়ার নিকাশি ব্যবস্থার সঙ্গে কেএমডিএ এবং সেচ দফতরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কেএমডিএ-র যেমন কয়েকটি পাম্প হাউস হাওড়ায় রয়েছে, তেমনই সেচ দফতরের দায়িত্বে থাকা কয়েকটি খাল হাওড়ার জমা জল বার করার কাজে মূল ভূমিকা পালন করে। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘ওই দুই দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী শুক্রবার পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে ওই দুই দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত লকগেটগুলির অবস্থা পরীক্ষা করে দেখবেন। এ ছাড়া, কেএমডিএ-র পাম্প হাউসগুলির পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। পরে ফের বৈঠকে বসে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’