সচেতন: মহিলাদের বোঝাচ্ছেন ‘প্যাডম্যান’। নিজস্ব চিত্র
ঋতুস্রাব নিয়ে ছুঁৎমার্গ কাটাতে এবং স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের প্রয়োজন বোঝাতে সোমবার হুগলির সপ্তগ্রাম পঞ্চায়েতের নামাজগড়ে আদিবাসী মহিলাদের সচেতনতায় শিবির করলেন চন্দননগরের বাসিন্দা সুমন্ত বিশ্বাস। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তিনি দাবি তুললেন, গ্রামের গরিব মহিলাদের কথা বিবেচনা করে গণবণ্টন ব্যবস্থায় স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হোক। এই দাবি তিনি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন। শিবিরে গরিব মহিলাদের হাতে ন্যাপকিন তুলে দেওয়া হয়। লিফলেট বিলি করা হয়।
সুমন্ত গৃহশিক্ষক। একাদশ থেকে এমএ ক্লাসের পড়ুয়াদের ভূগোল পড়ান। পড়ানো বাদে নিজের কার্যত সবটুকু সময় ব্যয় করেন মহিলাদের ঋতুকালীন সমস্যা সমাধানে সচেতনতা ছড়ানোর কাজে। এ জন্য নিজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ান। প্রত্যন্ত এলাকায় প্রান্তিক শ্রেণির মহিলাদের সচেতন করার পাশাপাশি স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করেন। এই কাজের জন্য তিনি ‘প্যাডম্যান’ বলে পরিচিত।
সুমন্তের কথায়, ‘‘এ নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদক্ষেপ করা উচিত। মহিলাদের সুরক্ষা, সম্মান নিয়ে কত কথা বলা হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মহিলাদের যথাসম্ভব বেশি প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করা হয়। কয়েক দিন পরেই পঞ্চায়েত ভোট। সেখানেও একই জিনিস দেখা যাবে। অথচ, গ্রামের গরিব মহিলাদের শরীরের এত জরুরি বিষয়ের দিকে নজর কোথায়! রাজনৈতিক দলগুলিও এ নিয়ে কোনও কথা বলে না।’’
ঋতুকালীন সময়ে মহিলাদের কতটা সচেতনতার মধ্যে রাখা উচিত, সোমবার নমাজগড়ে ওই শিবিরে সেই বিষয়ে নানা দিক তুলে ধরেন। ঋতুস্রাবের পিছনে থাকা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া বুঝিয়ে বলেন। আর্থিক সমস্যার জন্য অনেকেই ন্যাপকিনের পরিবর্তে অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করেন। সেই কারণে রেশনের মাধ্যমে সুলভে স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে দেওয়ার দাবি এ দিনের শিবিরেও তোলেন ‘প্যাডম্যান’। মহিলাদের তরফেও এই দাবি ওঠে। বিভিন্ন এলাকার অনেক মহিলাই এই দাবির সঙ্গে সহমত। তাঁরা মনে করেন, সরকারি ব্যবস্থায় স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হলে বহু মহিলা উপকৃত হবেন। অপরিচ্ছন্নতার কারণে যে সমস্ত রোগ হয়, তা দূর হবে।