বিক্ষোভ সামাল দিতে হাজির পুলিশ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত আরামবাগ পুরসভার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে পুরসভার চাঁদুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। সকাল ১০টা থেকে প্রায় আধ ঘণ্টা টিকাকরণ কর্মসূচি বন্ধ থাকার পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রথম ডোজ় নিতে আসা উপভোক্তাদের পক্ষে চাঁদুরের নাজির আলির অভিযোগ, “গত ৫ দিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রথম ডোজ় নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, দ্বিতীয় ডোজ়ই দেওয়া হচ্ছে। অথচ চোখের সামনে দেখছি, গাড়ি করে পুর প্রশাসকের দেওয়া কুপন নিয়ে লোকজন আসছেন। তাঁদের পিছনের গেট দিয়ে ঢুকিয়ে টিকা দেওয়া হচ্ছে। খালি পুর প্রশাসক আর বিদায়ী কাউন্সিলরদের আত্মীয়রাই প্রথম ডোজ় পাচ্ছেন। এই স্বজনপোষণ আর দুর্নীতিরই প্রতিবাদ করেছি আমরা।”
৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আসা রেখা দাসের অভিযোগ, “গত দু’দিন ধরে আধারকার্ড নিয়ে লাইন দিয়ে টিকাকেন্দ্রে ঢুকলেও পুর প্রশাসকের দেওয়া কুপন না থাকায় বের করে দিচ্ছে। আমরা বলেছি, এ দিন যদি প্রথম ডোজ়ের টিকা দেওয়া হয়, আমাদেরই আগে দিতে হবে। পিছনের দরজা দিয়ে একজন লোকও ঢোকানো যাবে না।”
কুপন দেওয়া নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ এনেছেন স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্যকর্মীর অভিযোগ, “পুরসভা এলাকার বাসিন্দা নন, স্থানীয় বিভিন্ন পঞ্চায়েতের শাসক দলের নেতা-কর্মী এবং তাঁদের আত্মীয়দেরও টিকা দিতে হয়েছে। কুপন দেওয়ায় স্বচ্ছতা থাকলে এতদিন শহরের ১৯টি ওয়ার্ডের ৩০ হাজার মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যেত।”
স্বজনপোষণের অভিযোগ উড়িয়ে পুর প্রশাসক স্বপন নন্দী বলেন, “টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয়নি। পুরবাসীদের মধ্যে যাঁরা পুরসভায় আবেদন করেছেন, তাঁদের কুপন দেওয়া হয়েছে। টিকা সরবরাহ অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজ়কে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তারপর ফের প্রথম ডোজ় হবে। এ দিনের বিক্ষোভকারীদের তা বোঝানো হয়েছে। এ দিন শুধু দ্বিতীয় ডোজই দেওয়া হয়েছে।”
অন্য দিকে, কলকাতায় টিকা কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করল বিজেপি। দলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল বসুর অভিযোগ, টিকা নিয়েও বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের নেতারা দলবাজি করছেন। ওই দলের পুরসভার কো-অর্ডিনেটরদের অফিস থেকে কুপন দিয়ে স্বজনপোষণ করা হচ্ছে। বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের কুপন দেওয়া হচ্ছে না। বিক্ষোভে যোগ দেন বিজেপির প্রাক্তন দুই জেলা সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য, কৃষ্ণা ভট্টাচার্য প্রমুখ।