শিশুদের খাওয়ানো চলছে। কামারপুকুর আদিবাসীপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
পুষ্টির জন্য এখনও ডিমটাই যা ভরসা।
মূল্যবৃদ্ধির জেরে হুগলির আরামবাগের বেশির ভাগ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তরকারিতে সয়াবিন এবং আনাজের পরিমাণ কমছে। আলুর টুকরো দু’টির বদলে একটিতে এসে ঠেকেছে। ডিমের দাম বাড়লেও তাতে এখনও হাত পড়েনি। সপ্তাহে ৬ দিনই গোটা ডিম পাচ্ছে উপভোক্তারা। তবে, এ ভাবে কত দিন টানা যাবে সংশয়ে রয়েছেন কেন্দ্রগুলির কর্মীরা।
শিশু, অন্তঃসত্ত্বা এবং সদ্য মা হয়েছেন, এমন মহিলারা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে পুষ্টিকর খাবার পান। কোভিড-পর্বে টানা প্রায় দু’বছর বন্ধ ছিল কেন্দ্রগুলি। গত মাসে খোলে। ছ’দিনই গোটা ডিম বরাদ্দ হয়। এ ছাড়া, সপ্তাহে তিন দিন ভাত-আনাজের তরকারি এবং তিন দিন খিচুড়ি-আনাজ ও সয়াবিনের তরকারি।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ির শিশুদের জন্য মাথাপিছু প্রতিদিন বরাদ্দ ৮ টাকা। মহিলাদের জন্য সাড়ে ৯ টাকা। চাল ছাড়া সব কিছুর খরচ এর মধ্যেই ধরা হয়েছে। উপভোক্তাদের চাহিদা মূলত ডিমের। কিন্তু ওই বরাদ্দে য়ে আর পারা যাচ্ছে না, মানছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
মায়াপুর-২ পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী নীলিমা সরকার বলেন, “খুব কষ্টেসৃষ্টে চালাতে হচ্ছে। ডিমের জোগানটা ঠিক রাখছে পেরেছি আপাতত। তবে পাতে সয়াবিন, আনাজ বা আলুর কম দিতে হচ্ছে। এ জন্য কথাও শুনতে হচ্ছে।” গোঘাট-২ ব্লকের শ্রীপুর ৭৩ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী মুনমুন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগে খিচুড়ি আনাজ গিজগিজ করত। এখন বিট, গাজর, টোম্যাটো, আলু, বাঁধাকপি, কুমড়ো— সবেরই দাম বেড়ে গিয়েছে। সেই হারে আনাজ দিতে পারছি না। ডিমটাই যা দিতে পারছি।’’
উপভোক্তাদের মধ্যে গোঘাটের মুকুন্দপুরে বছর চারেকের মনসা হাঁসদার মা লতা বলেন, “প্রতিদিন ডিমের ব্যবস্থা ঠিক আছে। অঙ্গনওয়াড়িতে আনাজ কিছুটা কমেছে। না কমিয়ে যে উপায় নেই, সে তো বাড়িতেও নিজেরা টের পাচ্ছি।” একই কথা বলেছেন, আরামবাগের ভাবাপুর কেন্দ্রের অভিভাবক সুজাতা মালিক এবং আরও অনেকে।