ব্যাঙ্কের সামনে মহিলাদের ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহক সেবা কেন্দ্র (কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট) খুলে প্রতারণার অভিযোগ উঠল গোঘাটের হাজিপুরে। অভিযোগ, কেন্দ্রটির পরিচালক দীপায়ন হাজরা গ্রাহকদের ৪০ লক্ষ টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার দুপুরে প্রতারিতদের একাংশ ওই কেন্দ্রের কাছেই সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের শাখায় বিক্ষোভ দেখান। শাখা ম্যানেজারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে তাঁরা প্রতিকার দাবি করেন।
কেন্দ্রটি বছর খানেক আগে চালু হয়। কিছুদিন ধরে সেটির ঝাঁপ বন্ধ। অভিযুক্ত দীপায়নও বেপাত্তা। তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এ দিন তাঁর ফোন বন্ধ। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তারও জবাব মেলেনি। সংশ্লিষ্ট ব্যঙ্কের শাখা ম্যানেজার চন্দন সিংহ বলেন, “গ্রাহকদের প্রতারণার অভিযোগ পেয়েছি। ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁদের নির্দেশ মতোই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। গ্রাহকদের থানায় এফআইআর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’
ওই ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক হল দীপায়নের বিরুদ্ধে গ্রাহকের পাশবই নিজের কাছে রেখে দেওয়া, সময়ে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না দেওয়া ইত্যাদি অভিযোগ আসছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্তও শুরু হয়। তার মধ্যেই দীপায়ন কেন্দ্রের ঝাঁপ বন্ধ করে পালান। ম্যনেজার বলেন, ‘‘১ ফেব্রুয়ারি সকালে ওঁর সঙ্গে শেষ বার যোগাযোগ করা গিয়েছে।”
প্রতারিতদের মধ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাই বেশি। ‘পাবা ভোলানাথ গোষ্ঠী’র সম্পাদিকা পূজা শাসমলের অভিযোগ, ‘‘আমাদের গোষ্ঠীর নেওয়া ঋণের মোট দেড় লক্ষ টাকা এবং সুদ দু’হাজার টাকা গত ২০ জানুয়ারি জমা দিয়েছিলাম ওই কেন্দ্রে। এক সঙ্গে এত টাকা জমা হবে না বলে দীপায়ন পাশবই এবং টাকা রেখে দেন। সেই টাকা এখনও জমা পড়েনি।’’
‘বাহাগল দেবী স্বনির্ভর গোষ্ঠী’র সভানেত্রী সুস্মিতা বিশ্বাসের অভিযোগ, “গোষ্ঠীর ঋণের ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম গত ১৮ জানুয়ারি। কিন্তু সেই টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়েনি।” হাজিপুরের ঝুমা মালিকের অভিযোগ, “ভাই মুম্বই থেকে টাকা পাঠিয়েছিল ১৪ অক্টোবর। সেই টাকা তুলতে গেলে লিঙ্ক নেই বলে পাশবই এবং টিপসই নিয়ে রেখে দিয়েছিলেন দীপায়ন। গত ডিসেম্বর মাসে পাশবইটা পেলেও দেখি ৩ হাজার টাকা নেই।’’
দীপায়নের পৈতৃক বাড়ি গোঘাটের বাহাগল গ্রামে। কিন্তু বছর দুয়েক হল তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুরে আছেন তাঁর আত্মীয়েরা জানান। তাঁর বাবা তরুণবাবু ছেলের খবর রাখেন না বলে জানিয়েছেন।