শ্রীরামপুরে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ মিছিল ‘অভয়া কার্নিভাল’। নিজস্ব চিত্র।
পুজোয় উৎসবে মাতলেন অনেকে। তাতে গা ভাসাল না নাগরিক সমাজের একাংশ। তারা পথে নামল আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে চলা ঘটনাপ্রবাহের বিরুদ্ধে আন্দোলনে শামিল হতে। ফলে, পুজোর মধ্যেও দুই জেলাতেই (হাওড়া ও হুগলি) অব্যাহত রইল নাগরিক আন্দোলন। দাবি উঠল, আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি দ্রুত সরকার মেনে নিক। এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে কলকাতার ধর্মতলায় চিকিৎসকদের অনশন তোলার জন্য উদ্যোগী হোক সরকার।
আর জি করের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবিতে অনশনরত চিকিৎসকদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে রবিবার ‘অরন্ধন’ পালন করলেন কোন্নগরের রামমোহন প্লেস রোডের বাসিন্দা আত্রেয়ী ভৌমিক ও তাঁর পরিবার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আত্রেয়ী বলেন, ‘‘ডাক্তারবাবুরা এবং আইএমএ-র সর্বভারতীয় ফোরামের প্রতিনিধিরা কলকাতায় এসে সাধারণ মানুষের উদ্দেশে অরন্ধনের ডাক দিয়েছেন। সেই ডাকেই আমরা সাড়া দিয়েছি বিবেকের তাড়নায়। রবিবার উমা বিদায়ের দিন আমি এবং আমার গোটা পরিবার অরন্ধন পালন করেছি।’’ তাঁর প্রশ্ন, আর কত দিন অনশন চললে, আর কত ডাক্তারবাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজ্য সরকারের বোধোদয় হবে!
একই কারণে শনিবার চন্দননগর নাগরিক সমাজের ডাকে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনশন অবস্থান হয় শহরের আইএমএ ভবনের সামনে। ১৯ জন মহিলা-সহ ২৮ জন অনশন করেন। অনশনকারীদের পক্ষে আইনজীবী অপরূপা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা তলানিতে ঠেকেছে। একের পর এক ঘটনা ঘটছে। দুষ্কৃতীরা এতটা মদতপুষ্ট হচ্ছে কী করে? উৎসবে থাকতে চেয়েও আমরা পারিনি। সেই পরিস্থিতি নেই।’’ সঙ্গীতশিল্পী সমাদৃতা দত্ত বলেন, ‘‘বিচার না মেলা ইস্তক নাগরিক আন্দোলন চলবে।’’
শ্রীরামপুর শহরেও পুজোর দিনগুলিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে নাগরিক সমাজের ডাকে। শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের নবগ্রামে শুক্রবার অনশন অবস্থান কর্মসূচি নেয় একটি মানবাধিকার সংগঠন। সকাল ৯টা থেকে ১২ ঘণ্টা ওই কর্মসূচিতে এক কিশোর-সহ ১৭ জন অনশন করেন।
হাওড়ায় আন্দুল-মৌড়ি নাগরিক মঞ্চের ডাকে শুক্রবার অষ্টমী-নবমীর সন্ধ্যায় আন্দুল স্টেশনের সামনে গান গেয়ে, অভিনয় করে প্রতিবাদ জানান বহু মানুষ। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বালিকা হত্যার ঘটনারও প্রতিবাদ করা হয়। শনিবার দুপুর ২টো থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ডোমজুড়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির দালানে পুরুষ-মহিলা মিলে ১৫ জন প্রতীকী অনশন করেন ‘আমরা ডোমজুড়বাসী’র ডাকে। উপস্থিত ছিলেন শতাধিক মানুষ। উদ্যোক্তাদের তরফে ওই চিকিৎসকের কন্যা তিয়াসা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে আমরা লাগাতার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি। শনিবার ছিল নবম কর্মসূচি।’’