(বাঁ দিকে) তৃণমূল বিধায়কের গাড়ির বনেটে বিজেপি কাউন্সিলরের কন্যা। নিরাপত্তারক্ষীদের দিকে হাত উঁচিয়ে বিজেপি কাউন্সিলর উমা মণ্ডল (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি আটকে অভব্য আচরণ এবং গালিগালাজের অভিযোগ টাকি পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর উমা মণ্ডল, তাঁর পরিবার এবং দলীয় সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছিল রবিবার রাতে। যদিও ঘটনার সময় বিধায়ক ওই গাড়িতে ছিলেন না বলেই খবর। তবে বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর সোমবার সন্ধ্যায় হাসনাবাদ থানায় অভিযোগ জানান বিধায়ক। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম-পরিচয় অবশ্য এখনও জানা যায়নি। তবে কাউন্সিলর বা তাঁর পরিবারের কেউ ধৃতের তালিকায় নেই বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
টাকি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উমা। রবিবার রাতে ওই ওয়ার্ডের ভিতর দিয়েই বিধায়কের গাড়ি যাচ্ছিল। গাড়িতে ছিলেন বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষীরা। কাউন্সিলর, তাঁর মেয়ে ও কয়েক জন দলীয় সমর্থকও সেই সময় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়েই কাউন্সিলর ও তাঁর অনুগামীরা বিধায়কের গাড়ি আটকান। ঘটনার যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে বিধায়কের গাড়ির বনেটে উঠে বসেছেন কাউন্সিলর-কন্যা। অপর একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে কাউন্সিলর হাত উঁচিয়ে ধরেছেন নিরাপত্তারক্ষীকে (যদিও ওই ছবিগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)।
অভিযোগ, বিধায়কের গাড়ির পথ আটকে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। গাড়ি দেখামাত্রই কটূক্তি শুরু হয়েছিল বলেও অভিযোগ। এর পর বিধায়কের গাড়ি থামিয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা নেমে আসেন। তখন তাঁদের সঙ্গে প্রথমে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কাউন্সিলর ও তাঁর অনুগামীরা। কাউন্সিলরের মেয়েও গাড়ির বনেটে উঠে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন বলে অভিযোগ। ভিড়ের মধ্যে থেকে কেউ কেউ বিধায়কদের দেহরক্ষীদের উপরেও চড়াও হন বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে হাসনাবাদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে উভয় পক্ষকেই সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে হাসনাবাদ থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের মহিলা কর্মী এবং সমর্থকেরা। ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি তোলেন তাঁরা। বিধায়ক সপ্তর্ষিও থানায় যান সন্ধ্যায় এবং একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও ধৃতদের তালিকায় কাউন্সিলর বা তাঁর পরিবারের লোকেরা নেই বলেই প্রাথমিক ভাবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হুসেন মেহদি রহমান জানিয়েছেন, “একটি ঘটনা ঘটেছিল। হাসনাবাদ থানায় অভিযোগ হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক বলেন, “আমার গাড়ি ফেরার সময় এখানকার কাউন্সিলর এবং তাঁর অনুগামীরা গাড়িটিকে হঠাৎ করে রাস্তায় আটকান। গালিগালাজও করেন। আমার নিরাপত্তারক্ষীদের গায়ে হাত দেন। বিভিন্ন ভাবে মানুষকে আহত করেন। আমাদের দল ও নেত্রীর নামে গালিগালাজ করেন। তা অপমানজনক ছিল।” রবিবারের ঘটনার জন্য ‘ভুল’ স্বীকার করেছেন কাউন্সিলরও। তিনি বলেন, “রবিবার একটি ছোট ঘটনা ঘটেছিল। সেটি রবিবারই মিটে গিয়েছে। আমি স্বীকার করছি, কমবেশি ভুলত্রুটি হয়েছে। আমরা তখন ওখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। গাড়িটিও যাচ্ছিল। সেই সময়েই তর্কাতর্কি হয়েছে। তবে মারামারি হয়নি।”