পড়ুয়া ভর্তি বেড়েছে, দাবি প্রধান শিক্ষিকার
Government School

Kulgachia: সরকারি স্কুলে পড়ালে সুবিধা কী, প্রচার ফ্লেক্সে

রূপাদেবী জানান, সরকারি স্কুলে কোনও বেতন দিতে হয় না।

Advertisement

সুব্রত জানা

কুলগাছিয়া শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:১০
Share:

টাঙানো হয়েছে এমনই ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র।

বেশ কিছু বছর ধরেই ছাত্রছাত্রীর অভাবে রাজ্যের অনেক সরকারি স্কুলের উদ্বেগ বাড়ছে। বেসরকারি স্কুলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কোথায় যেন পিছিয়ে পড়ছে তারা। এ বার স্কুলে পড়ুয়া টানতে সরকারি ‘সুবিধা’র কথা জানিয়ে ফ্লেক্স টাঙালো কুলগাছিয়ার বামুনহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষিকা রূপা চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এই প্রচারে ফলও মিলেছে। গত বছর প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া ভর্তি হয়েছিল ১৫০ জন। এ বছর এখনও পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ২১০ জন। এই সংখ্যাটা তিনশোয় ঠেকবে বলে আশাবাদী তিনি।

Advertisement

ইদানীং অভিভাবকদের মধ্যে সরকারি স্কুলের বদলে একটু বেশি খরচ দিয়ে বেসরকারি স্কুলেই ছেলে বা মেয়েকে ভর্তি করার প্রবণতা বেশি। বেসরকারি স্কুলের রমরমায় অনেক শতাব্দী-প্রাচীন স্কুলে পড়ুয়া কমে গিয়েছে। তবে করোনা-পরবর্তী সময়ে ফের সরকারি স্কুলে পড়ুয়া ভর্তি বেড়েছে বলে দাবি অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এর জন্য আর্থিক সঙ্কটকেই অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তাঁরা। এক শিক্ষকের ব্যাখ্যা, করোনায় আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ায় অনেকে বাচ্চাদের বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর খরচ আর বহন করতে পারছেন না। কেউ কেউ ভাল সরকারি স্কুলে নিখরচায় পড়াতে চাইছেন। তাই হয়তো এই বদল।

রূপাদেবী জানান, সরকারি স্কুলে কোনও বেতন দিতে হয় না। প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের পোশাক থেকে শুরু করে বই-খাতা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। নিয়মিত মিড ডে মিল দেওয়া হয়। কত প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যায়। অনেকেই এ বিষয়ে জানেন না। তিনি বলেন, ‘‘বেশি টাকা খরচ করে যাঁরা সন্তানকে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন, তাঁদের সরকারি স্কুলের কিছু সুবিধার কথা মনে করে দিয়েছি। যদি কারও সুবিধা মনে হয়,
তিনি আসবেন।’’

Advertisement

আর্থিক সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন অনেক অভিভাবকও। রিনা বেগম নামে এক অভিভাবিকার কথায়, ‘‘করোনার সময় স্কুল বন্ধ ছিল। সে সময়ও মাইনের জন্য স্কুল থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তাই এ বার মেয়েকে সরকারি স্কুলেই ভর্তি করিয়ে দিলাম।’’ আসবেদা বেগম নামে আর এক অভিভাবিকা বলেন, ‘‘দু’জায়গাতেই অনলাইনে পড়াশোনা চলছে। তাহলে আর অত টাকা দিয়ে ভর্তি করিয়ে কী লাভ? তাছাড়া সরকারি স্কুলের এত সুবিধা কথাও জানতাম না।’’

শিক্ষাবিদ সন্তোষকুমার দাস বলেন, ‘‘সরকার শিক্ষকদের বেতন কাঠামো এবং পড়ুয়াদের যে সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে তাতে বেসরকারি স্কুলে যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পড়াশোনার প্রতি যত্নবান নন। তাই অভিভাবকরা বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করতে বাধ্য হন। এক্ষেত্রে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ যে ভাবে সরকারি স্কুলে পড়ুয়া টানতে উদ্যোগী হয়েছেন, সেটা প্রশংসনীয়। শিক্ষা দফতরের তরফে সরকারি স্কুলগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়া দরকার। তা হলেই সরকারি স্কুলের উপরে সামগ্রিক ভাবে আস্থা বাড়বে মানুষের।’’

উলুবেড়িয়া উত্তর চক্রের অবর শিক্ষা পরিদর্শক দিলীপকুমার মাইতি বলেন, ‘‘আমরা চাই সরকারি সুযোগ সুবিধা পড়ুয়ারা পাক। বামুনহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয় যে ভাবে প্রচার করে পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করছে, সেটা শুনে ভাল লাগছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement