—প্রতীকী চিত্র।
এক প্রোমোটারের রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল হাওড়ার সালকিয়ায়। মঙ্গলবার সকালে তাঁর পাঁচ তলা ফ্ল্যাটের নীচ থেকে মিলল দেহ। এ নিয়ে জোর চাঞ্চল্য এলাকায়। তদন্ত শুরু করেছে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম দেবাশিস বর্মণ। ৪৫ বছরের দেবাশিস আবাসন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। সালকিয়ার কালীতলা লেনে একটি পাঁচ তলার ফ্ল্যাটে স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ওই প্রোমোটার। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, নিজের এলাকাতেই বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট নির্মাণ করছেন তিনি। আচমকা তাঁর মৃত্যুতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে পরিবার। মৃতের স্ত্রী রেখা বর্মণ জানান, সোমবার রাত ১০টা নাগাদ বাড়ি ফেরেন দেবাশিস। খাওয়াদাওয়ার পর একটি ঘরে গিয়ে মদ্যপান করেন। তার পর ঘুমোতে যান। মঙ্গলবার সকালে দেবাশিসের স্ত্রী দেখেন, স্বামী বাড়িতে নেই। এত সকালে কোথাও গেলে তিনি বলেই যান। তিনি হাঁকডাক করে সাড়া পাননি। হঠাৎ বারান্দা থেকে নীচে উঁকি দিয়ে দেখে চমকে ওঠেন তিনি। দেখেন মাটিতে পড়ে রয়েছেন তাঁর স্বামী।
তার পর সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের খবর দেন দেবাশিসের স্ত্রী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। দেখা যায়, আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই প্রোমোটারের। মৃত্যুর কারণ জানতে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। রেখার দাবি, ইদানিং প্রোমোটিং ব্যবসায় তাঁর স্বামীর সঙ্গে কয়েক জনের গন্ডগোল চলছিল। পাওনাদারেরা টাকার জন্য বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যেতেন। তবে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে তিনি কোনও নাম বলতে পারেননি। কারণ, নিজের ব্যবসার ব্যাপারে স্বামী তাঁর সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করতে চাইতেন না বলে দাবি রেখার। মৃতের এক আত্মীয় জানান, দেহটি মাটিতে চিত অবস্থায় পড়েছিল। তাঁরা একে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মানতে নারাজ।
অন্য দিকে, প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানাচ্ছে, ওই প্রোমোটারের বাজারে অনেক টাকা ধার ছিল। প্রোমোটিং ব্যবসা ছাড়াও, কলকাতার একটি হোটেলে ডান্স ফ্লোর চালাতেন দেবাশিস। পাঁচ তলা ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকেই পড়ে গিয়ে তিনি মারা গিয়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। ওই বারান্দায় কোনও ফেন্সিং ছিল না। আর দেবাশিসের মাথার পিছনের দিকেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। এটা নিছক দুর্ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলিশ এ-ও জানাচ্ছে, যে হেতু মত্ত অবস্থায় ছিলেন দেবাশিস, তাই কোনও কারণে বারান্দায় এসে টাল সামলাতে না পেরে নীচে পড়ে গিয়েছেন। এ ব্যাপারে মৃতের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।