কামারকুণ্ডু উড়ালপুল। নিজস্ব চিত্র
হুগলির কামারকুণ্ডুতে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার রেললাইনের উপরে উড়ালপুলের কাজ শেষ হয়েছে এক মাসেরও বেশি সময় আগে। কিন্তু সেটি এখনও চালু করা হয়নি। পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ স্পষ্টই জানিয়েছেন, স্থানীয় কিছু দাবি থাকায় ওই উড়ালপুল চালু করা যাচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য দাবি, অবিলম্বে উড়ালপুল চালু করা হোক।
রেলের লেভেল ক্রসিংয়ের গেট পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে গেলে তাঁদের যাতায়াতে সমস্যা হবে বলে স্থানীয় মানুষজন প্রশাসনকে জানিয়েছেন। সেই সমস্যা মিটিয়ে উড়ালপুল চালু করতে গেলে আরও বেশ কিছু দিন সময় লাগতে পারে। এলাকাবাসী চান, যেটুকু সমস্যা রয়েছে, তা প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা করে মেটানো হোক। উড়ালপুল চালু হতে না দেওয়ার নেপথ্যে শাসক দলের একাংশ কলকাঠি নাড়ছে বলেও স্থানীয়দের একাংশ অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন।
বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের উপরই কামারকুণ্ডু স্টেশন। কাছেই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। আরামবাগ মহকুমায় যাওয়ার জন্য বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কামারকুণ্ডুতে লেভেল ক্রসিংয়ের গেট পড়লেই যানজটের যন্ত্রণায় দশকের পর দশক ধরে মানুষ ভুগছেন। বৈদ্যবাটীর নিমাইতীর্থ ঘাট থেকে গঙ্গার জল তুলে এই সড়ক ধরেই ভক্তেরা তারকেশ্বর মন্দিরে যান। ফলে, শ্রাবণ মাসে এই পথে হাজার হাজার ভক্তের ঢল নামে। বছরের অন্য সময়েও একই ভাবে পুণ্যার্থীরা যান। কয়েক বছর আগে কামারকুণ্ডু রেলগেটে ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
সব মিলিয়ে এখানে উড়ালপুলের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। সেই দাবিকেই সম্মান জানিয়ে রেল এবং রাজ্য সরকার বছর তিনেক আগে ওই উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু করে। করোনা পরিস্থিতিতে ওই কাজ দীর্ঘায়িত হয়। মাসখানেক আগে কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু, জটিলতা তৈরি হয়েছে উদ্বোধন ঘিরে।
স্থানীয় মানুষজনের একাংশের দাবি, লেভেল ক্রসিং রেল কর্তৃপক্ষ এখন পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে দু’পারের বাসিন্দাদের যাতায়াতে খুবই সমস্যা হবে। তাঁদের ঘুরপথে যাতায়াত করতে হবে। সেই নিয়ে রেল এবং জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরা একপ্রস্ত বৈঠকও করেছেন।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কাজ শেষ হলেও স্থানীয় কিছু দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই উড়ালপুল চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিষয়টি যাতে দ্রুত মেটে, সেই চেষ্টা চলছে।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দুধকুমার ধাড়া বলেন, ‘‘স্থানীয় লোকজন তাঁদের সমস্যার বিষয়টি জানিয়েছেন। আমরাও রেল ও জেলা প্রশাসনকে তা সমাধানের জন্য বলেছি। এখন রেলের তরফে ওই এলাকায় একটি আন্ডারপাস তৈরির লিখিত আশ্বাস পেলেই উড়ালপুল চালু করা যেতে পারে।’’