প্রকল্পে তৃণমুল নেতার ভাইয়ের নাম নিয়ে পোস্টার। — ফাইল চিত্র।
কয়েক বছর আগে রাজ্য সরকারের গীতাঞ্জলি আবাস যোজনায় ঘর পেয়েছেন হুগলির জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সভাপতি মৃগাঙ্ক মালের ভাই শশাঙ্ক। তিনি জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ মণিমা মালের স্বামী। ফের তাঁর নাম উঠেছিল আবাস প্লাসের তালিকায়। প্রশাসন ওই তালিকা থেকে তাঁরনাম বাদ দিয়েছে। কিন্তু কেন দুই আবাস প্রকল্পে তাঁর নাম আসবে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বুধবার পোস্টার পড়ল ওই পঞ্চায়েতের তালতলাহাট ও রামপাড়া এলাকায়।
পোস্টারের নীচে রয়েছে ‘ফুরফুরা বাঁচাও কমিটি’র নাম। ওই কমিটিতে কারা রয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে, তাতে জবাব তলব করা হয়েছে পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের শামিম আহমেদের কাছ থেকে। একই সঙ্গে শামিম ও মৃগাঙ্গকে সব পদ থেকে বরখাস্ত এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত ফুরফুরার দাবি জানানো হয়েছে পোস্টারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ‘ভালবাসা’ এবং স্থানীয় বিধায়ক তথা পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর প্রতি ‘আস্থা’র কথাও লেখা হয়েছে পোস্টারে।রয়েছে ফুরফুরা শরিফে ঠিকাদারী-রাজের বিরুদ্ধে সমস্ত মানুষকে এক হওয়ার আহ্বানও।
ফুরফুরা পঞ্চায়েতের প্রধান শামিমের দাবি, ‘‘বিরোধীরা পোস্টার লাগাননি। এক শ্রেণির মানুষ একরাশ হতাশা নিয়ে ঘুরছেন। তাঁরাই পোস্টার মেরেছেন। সাহস থাকলে দিনের আলোয় পোস্টার মারুক। অভিযোগ থাকলে পঞ্চায়েত গিয়ে বলুন। আবাস প্লাস যোজনায় ঘর পাওয়ার বিষয়ে প্রধানের কোনও হাত থাকে না।’’
এ দিন মৃগাঙ্কের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। রামপাড়ায় তাঁর ভাই শশাঙ্কের নবনির্মিত পাকা বাড়ি রয়েছে। পাশে রয়েছে ইটের দেওয়াল ও টালির ছাউনির আর একটি বাড়ি। তাঁর স্ত্রী, জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ মণিমার দাবি, ‘‘কী ভাবে আবাস প্লাসে স্বামীর নাম এল, জানি না। ব্লক প্রশাসন নাম বাদ দিয়েছে। একবার গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ৭০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। পঞ্চায়েত ভোট এসেছে বলে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা রটানো হচ্ছে।’’ একই দাবি শশাঙ্কেরও।
ব্লক প্রশাসনের এক কর্তাও বলেন, ‘‘উপভোক্তা-তালিকা যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায় উনি (শশাঙ্ক মাল) বাড়ি পাওয়ার অযোগ্য। তাই তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।’’
আবাস-তালিকা থেকে শশাঙ্কের নাম বাদ গেলেও বিজেপি রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদকের অভিযোগ, ‘‘এটা চোরেদের সরকার বারবার প্রমাণিত হচ্ছে। আবার প্রমাণিত হল ওই পোস্টারে। প্রধান ও তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিদুর্নীতিতে যুক্ত। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।’’