আধার লিঙ্ক করাতে কিনতে হবে গঙ্গাজল! নিজস্ব চিত্র।
ডাকঘরে আধার কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করতে গেলে কিনতে হবে গঙ্গাজল। এমনই আজব নিয়ম হুগলি জেলার পোলবা-দাদপুর ব্লকের গোস্বামী-মালিপাড়া গ্রামে। সোমবার এই অভিযোগে ডাকঘরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। বিক্ষোভের পর চুঁচুড়ায় হুগলি জেলার মুখ্য ডাকঘর জানিয়ে দেয়, গঙ্গাজল কেনা মোটেই বাধ্যতামূলক নয়।
গোস্বামী-মালিপাড়া গ্রামে স্থানীয় ডাকঘরে আধার কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর সংযুক্তিকরণ পর্ব চলছে। এ জন্য ডাকঘরকে প্রতি সংযুক্তিকরণ পিছু দিতে হচ্ছে ৫০ টাকা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এর সঙ্গে ৩০ টাকা দিয়ে ২৫০ মিলিলিটার গঙ্গাজলের বোতল কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে গ্রামবাসীকে। যদিও গঙ্গাজলের জন্য কোনও রসিদও দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। আরও অভিযোগ, পোস্টমাস্টার অসীম চক্রবর্তীকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে এক যুবকের আধার কার্ড আটকে রাখা হয়।
এ কথা জানতে পেরে সোমবার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ডাকঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। চাপের মুখে পোস্টমাস্টার বলেন, ‘‘ওই যুবক নিজেই আধার কার্ড রেখে দিয়ে গিয়েছেন। দফতর থেকে বিক্রির জন্য গঙ্গাজল পাঠানো হয়েছে। আমরা সকলকে ওই জল নিতে অনুরোধ করছি। কাউকে বাধ্য করা হচ্ছে না। তবে তার জন্য কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না।’’
যদিও গ্রাহকদের সঙ্গে কথোপকথনের পোস্টমাস্টারের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তার সত্যতা অবশ্য স্বীকার করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। সেই ভিডিয়োয় ভিন্নমূর্তিতে দেখা গিয়েছে পোস্টমাস্টারকে। ভিডিয়োয় এক গ্রাহকের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘৩০ টাকা না দিলে আধার কার্ড দেব না। এই গঙ্গাজল নিতেই হবে। তুমি যা পারবে করে নাও।’’ গ্রাহক অবশ্য বার বার রসিদ দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু তা মানা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারী তৃণমূল নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যা বলছে, মানুষ তাই করছে। আমরা এ ভাবে টাকা নিয়ে গঙ্গাজল বিক্রির প্রতিবাদ করছি। আগামি দিনে আমরা আরও বড় আন্দোলন করব। এমন ভাবে টাকা নেওয়ার অর্থ এক জন খেটে খাওয়া মানুষের থেকে টাকা কেড়ে নেওয়া।’’
অবশ্য বিজেপি-র যুব মোর্চার হুগলি জেলার সভাপতি সুরেশ সাউ বলছেন, ‘‘তৃণমূল যা করছে তাতে মনে হচ্ছে ডাকঘর থেকে মহুয়া মদও পাওয়া যাবে। এটা হরিদ্বারের গঙ্গাজল। কাউকে নিতে জোর করা হচ্ছে না। বাধ্য করা হচ্ছে না। ওরা মুর্খের দল।’’
বিষয়টি বিস্তারিত শুনে হুগলি মুখ্য ডাকঘরের সহকারী সুপার গীতা বার্লা বলেন, ‘‘ডাকঘরে গঙ্গাজল পাওয়া যাচ্ছে। তবে কোনও গ্রাহক তা কিনতে বাধ্য, এমনটা কোথাও বলা হয়নি।’’