১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১১ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন জিটি রোডের পাশের জলাশয় বুজছে (বাঁ দিকে)। ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৮ বিঘা জলাশয়ের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার হয়নি। ফের সেটি ঢেকেছে জঙ্গলে। নিজস্ব চিত্র।
জেলার সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর বা দিঘির হাল-হকিকত জানতে মাস খানেক আগে ‘জলাধার’ নামে একটি অ্যাপ চালু করেছে হুগলি জেলা প্রশাসন। জেলার সমস্ত জলাশয়কে ওই অ্যাপের আওতায় আনার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই দাবি ছিল প্রশাসনের। তবে বৈদ্যবাটীর পুরবাসিন্দাদের অভিযোগ, এই এলাকার অধিকাংশ জলাশয় জঙ্গল ও আবর্জনায় মুখ ঢাকছে। ভরাটও হয়ে যাচ্ছেকয়েকটি পুকুর। পুরপ্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি স্থানীয়বাসিন্দাদের প্রশ্ন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই ‘জলাধার’ অ্যাপ চালু করে লাভ কী হল?
পুরসভার হিসেব বলছে, এলাকায় নথিভুক্ত পুকুরের সংখ্যা প্রায় ২৩১টি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে জিটি রোড সংলগ্ন ওয়ার্ডের জলাশয়গুলি ইতিমধ্যে প্রোমোটার চক্র অবৈধ ভাবে ভরাট করেছে। বর্তমানে থাবা বসিয়েছে ওয়ার্ডের ভিতরে অনান্য জলাশয়ের দিকে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর অভিজিৎ গুহ বলেন, ‘‘আমার এলাকায় পুকুর বুজছে। তৃণমূল নেতাদের মদতেই প্রোমোটারদের এই বাড়বাড়ন্ত। মানুষের দৃষ্টি এড়াতে প্রথমে পুকুরে আবর্জনা ফেলা হয়। পরে সেই পুকুর ভরাট করা হয়। পুরপ্রধানের কাছে এ বার অভিযোগ জানাব।’’
প্রদীপ সরকার নামে এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না করার ফলে এলাকার পুকুরটি ফের আবর্জনায় ঢাকা। তার ফলে মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েছে। দূষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।’’ অন্য এক বাসিন্দার প্রশ্ন, ‘‘ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ‘জলাধার’ অ্যাপ চালু হল। কিন্তু তার কার্যকারিতা কই? পুকুরগুলো সংস্কার হলে নিকাশি সমস্যা মিটত। সে সব হবে কবে?’’
পুরসভার অবশ্য দাবি, আবর্জনা ফেলে ভরাট হওয়া কয়েকটিপুকুর সংস্কার করা হয়েছে। টাকার অভাবে অনেকগুলো পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। তবে পুকুর অবৈধ ভাবে ভরাটের খবর এলে পুরসভার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘‘প্রতিটি ওয়ার্ডের পুকুরগুলো কী অবস্থায় আছে, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ‘জলাধার’ অ্যাপে নথিভুক্ত করাহবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এলাকায় জলাশয় ভরাট ও আবর্জনাময় পুকুর সংস্কার প্রসঙ্গে অবশ্য কথা বলতে নারাজ বৈদ্যবাটী পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক গুণধর কুণ্ডু। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কথা বলতে বাধ্য নই। কোনও নির্দেশ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’