—নিজস্ব চিত্র।
দিন দুয়েক আগে ব্যবসার কাজে নদিয়াতে গিয়েছিলেন দুই ব্যবসায়ী। কিন্তু রাতে তাঁদের পরিবারের কাছে ফোন আসে। জানানো হয়, দুই ব্যবসায়ীকেই অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসাবে দাবি করা হয় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা! ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় অপহরণকারীদের ডেরায় হানা দিয়ে অপহৃত ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করলেন হাওড়ার বেলুড় থানা এবং সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা। শুধু তা-ই নয়, পাঁচ অপহরণকারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলুড়ের ভোটবাগান এলাকায় লোহালক্কড়ের ব্যবসা করতেন সমর খান এবং তাঁর ভাই মহম্মদ অম্বর। গত বৃহস্পতিবার দুই ভাই ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে নদিয়া গিয়েছিলেন। কিন্তু দুপুরের পর থেকেই পরিবারের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ হয়নি। বন্ধ ছিল ফোনও। রাতে অপহরণকারীরা ফোন করে সাড়ে পাঁচ কোটি মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহৃত ব্যবসায়ীদের পরিবারের তরফে বেলুড় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে অপহরণকারীদের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকেই তাঁরা জানতে পারেন অপহরণকারীদের গতিবিধি। শুক্রবার ভোরে হাওড়া থেকে নদিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশের একটি দল।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (উত্তর) বিশপ সরকার বলেন, ‘‘দুই অপহৃত ব্যবসায়ীকে নিয়ে দুষ্কৃতীরা শুক্রবার সকালে ফরাক্কার একটি হোটেলে গিয়ে উঠেছিল। সন্দেহ হওয়ায় হোটেলের কর্মচারীই ফরাক্কা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পর ওই হোটেল থেকে সুস্থ অবস্থায় দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতেরা হলেন রেহান শেখ, সীতাহার শেখ, রিঙ্কু শেখ, অভিজিৎ বালা এবং রাজু দেবনাথ। মালদহ এবং নদিয়ার বাসিন্দা অপহরণকারীরা। শনিবার পাঁচ অপহরণকারীকে হাওড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। শুনানি শেষে ভারপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তদের আট দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছিল কি না বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ঘটনার নেপথ্যে আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হবে বলে জনিয়েছেন তদন্তকারীরা।