Unnatural Death

জামিনে মুক্ত যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ফ্ল্যাট থেকে

বুধবার রাতে ফ্ল্যাট থেকেই অনীকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পেশায় একটি খাবার সরবরাহ সংস্থার কর্মী অনীকের লিলুয়ার বাড়িতে তাঁর স্ত্রী আছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:২২
Share:

অনীক সাহা। —ফাইল চিত্র।

জামিনে মুক্ত এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হল। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম অনীক সাহা (৩২)। তাঁর বাড়ি লিলুয়ার রবীন্দ্র সরণিতে। পর্ণশ্রী এলাকার গোপাল মিশ্র রোডের একটি ফ্ল্যাটের চারতলায় এক মহিলার সঙ্গে বসবাস করতেন অনীক। বুধবার রাতে ওই ফ্ল্যাট থেকেই অনীকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পেশায় একটি খাবার সরবরাহ সংস্থার কর্মী অনীকের লিলুয়ার বাড়িতে তাঁর স্ত্রী আছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

যে মহিলার সঙ্গে অনীক থাকতেন, তিনি একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থায় কাজ করেন। বিবাহ-বিচ্ছিন্না ওই মহিলার দুই ছেলে রয়েছে। তারাও মায়ের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে থাকে। অনীকের পরিজনেরা মহিলার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার পর্ণশ্রীর ওই ফ্ল্যাটে গেলে অভিযুক্ত মহিলা জানান, বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পরে সাড়ে তিন বছর ধরে অনীকের সঙ্গে সেখানে থাকছিলেন তিনি। মহিলা বলেন, ‘‘ডিভোর্সের পরে অনীকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চেয়েছিলাম, অনীকও স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে আমার সঙ্গে থাকুক। কিন্তু সেটা করেনি। এই নিয়ে ওর সঙ্গে অশান্তি হত। আমাকে মানসিক নির্যাতন এবং মারধর করত। ওর নামে পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করায় ওকে গ্রেফতার করা হয়। ১৫ দিন পরে জামিন পায়। ফের অনীক পর্ণশ্রীর বাড়িতে ফিরে আসে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মহিলা অনীকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। যাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তাঁকে ঘরে ফিরিয়ে আনলেন কেন? এর উত্তরে মহিলা বলেন, ‘‘জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে অনীক শূন্য থেকে শুরু করার কথা বলেছিল। আরও জানিয়েছিল, ভুলগুলো শুধরে নেবে। তাই ঘরে ফিরিয়েছিলাম। পরে উল্টে আমাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার হুমকি দিত। ফের গায়ে হাত তুলতে শুরু করে।’’

অনীকদের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, চারতলার ওই ফ্ল্যাট থেকে মাঝেমধ্যেই ঝগড়া ও মারামারির আওয়াজ পেতেন তাঁরা। বুধবার রাতেও তাঁরা ঝগড়া শুনেছিলেন। অভিযুক্ত মহিলা সে কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘বুধবার রাতেও আমাদের অশান্তি হয়। ফ্ল্যাটের নীচে এক জনকে বিষয়টা বলতে যাই। তখন অনীক আত্মহত্যা করবে বলে বারান্দা থেকে হুমকি দিতে থাকে। আগেও এমন আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে। কিন্তু এ বার বহু ক্ষণ ধরে দরজা না খোলায় আশপাশের লোকজনকে ডাকা হয়, পুলিশ ডাকা হয়। ঠাকুরঘরের দরজা ভেঙে দেখা যায়, ফ্যান থেকে দড়ি দিয়ে ঝুলছে।’’

পুলিশ অনীককে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। ওই যুবক মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত মহিলার তরফে কোনও প্ররোচনা ছিল কি না, সেটিও তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement