প্রতীকী ছবি।
এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল লিলুয়া এলাকার সুকান্তপল্লির নতুন পাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় সঞ্জয় হাজরা নামে ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর স্ত্রী মৌসুমী এবং পাড়ারই আর এক যুবক। সেখানে সঞ্জয়কে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এই খবর পৌঁছতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে সঞ্জয়কে পিটিয়ে মেরেছেন মৌসুমী এবং তাঁর প্রেমিক। অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের স্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, আর্থিক অশান্তির জেরে তাঁর স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ওই বাড়ির পিছন থেকে উদ্ধার করেছে রক্তমাখা একটি কাঁসর। এই ঘটনায় ওই কাঁসরটি কোনও ভাবে ব্যবহার হয়েছিল কি না, তা জানতে সেটি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে নতুনপাড়ায় নিজেদের বাড়িতেই থাকতেন লেদ কারখানার মালিক সঞ্জয়। বাসিন্দাদের দাবি, সম্প্রতি ওই এলাকারই অন্য এক যুবকের সঙ্গে সঞ্জয়ের স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই যুবকের বাড়িতে থাকা নিয়ে প্রতিদিন রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া, অশান্তি হত।
পুলিশ জেনেছে, শনিবারও এই নিয়ে দম্পতির মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়। তার পরে সব শান্ত হয়ে যায়। প্রতিবেশী পুতুল সরকার বলেন, ‘‘পাশের বাড়িতেই থাকি। এত বড় ঘটনা বুঝতেও পারিনি! মৌসুমীর ডাকে গিয়ে দেখি, সঞ্জয়কে মেঝেয় শোয়ানো রয়েছে। যে ছেলেটি ওদের বাড়িতে থাকে, সে তখন অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে গিয়েছিল।’’ আর এক বাসিন্দা সুমন সরকারের দাবি, “স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন হতে হয়েছে সঞ্জয়কে। অপরাধীদের শাস্তি চাই।’’ মৃতের দিদি রিনা বিশ্বাসের দাবি, ‘‘ভাইয়ের বৌ আমার বাবার উপরেও অত্যাচার করত।’’
পুলিশ জানায়, শনিবারের এই ঘটনার পর রাতেই দাশনগরে মা-বাবার কাছে চলে যান মৌসুমী। সেখান থেকেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে এটি আত্মহত্যা, না কি খুন। আমরা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতের স্ত্রী ও এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। পরিবারের তরফে এখনও খুনের অভিযোগ দায়ের হয়নি।’’