নাম বিভ্রাটের জেরে গ্রেফতার গৃহবধূ। — নিজস্ব চিত্র।
গ্রেফতারি পরোয়ানায় নাম-বিভ্রাট। তার জেরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার গৃহবধূ। ধৃতকে শনিবার যখন হাওড়া আদালতে নিয়ে আনা হয়, আইনজীবীরা বুঝতে পারেন ভুল মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে পুলিশ ওই মহিলাকে আদালতে না হাজির করিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
হাওড়ার নলপুর স্টেশনের কাছে ছেলেকে নিয়ে থাকেন পঞ্চাশোর্ধ্ব মোমেনা সরকার। তাঁর দাবি, শুক্রবার সকালে একটি বধূ নির্যাতন মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে মানিকপুর ফাঁড়ির পুলিশ তাঁর বাড়িতে যায়। মোমিনাকে শনিবার সকালে সব প্রমাণপত্র নিয়ে ফাঁড়িতে দেখা করতে বলে পুলিশ। সেই মতো শনিবার সকালে মোমেনা তাঁর ছেলেকে নিয়ে মানিকপুর ফাঁড়িতে যান। তখন এক পুলিশ অফিসার তাঁকে জানান, মোমিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবারই হাওড়া আদালতে তাঁকে হাজির করানো হবে। পুলিশের মুখে এ কথা শুনে ফাঁড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মহিলা। খানিক শুশ্রূষার পর তাঁকে নিয়ে আসা হয় হাওড়া আদালতে। তখনই গ্রেফতারি পরোয়ানায় নাম বিভ্রান্তি নজরে পড়ে আইনজীবীদের।
মোমিনার ছেলে সেলিম সরকার জানিয়েছেন, তাঁর মাকে ২০১৫ সালের একটি বধূ নির্যাতন মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে। যদিও তাঁর বাড়িতে গৃহবধূ নির্যাতন সংক্রান্ত কোনও মামলা নেই। যাঁর নামে ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল তাঁর নাম মোমিনা বেগম। দু’জনের বয়স এবং স্বামীর নামও আলাদা। মোমিনার ছেলে জানান, তাঁর বাবা সফিউদ্দিন সরকার বছর দশেক আগে মারা গিয়েছেন। মোমিনা বেগমের স্বামী শেখ শহিদুল। থাকেন অন্য ঠিকানায়। সেলিমের অভিযোগ, তাঁর মা বার বার পুলিশকে নিজের পরিচয় জানালেও পুলিশ তা মানতে চায়নি। তাঁকে জোর করে গ্রেফতারির নথিতে (অ্যারেস্ট মেমো) টিপসই করিয়ে হাওড়া কোর্টে নিয়ে আসে পুলিশ। এতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন মোমিনা বলে দাবি ছেলে সেলিমের। হাওড়া আদালতের আইনজীবীরা গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে যে নোটিস তা খুঁটিয়ে পড়ে বুঝতে পারেন, পুলিশের ভুলেই সমস্যা। সঙ্গে সঙ্গে মানিকপুর পুলিশ ফাঁড়ির ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন আইনজীবীরা। ঘটনার কথা শুনে তিনি মোমিনাকে বাড়ি পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই মতো মোমিনার চিকিৎসার পর তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
মোমিনার পরিবারের লোক গ্রেফতারি নিয়ে পুলিশি নিগ্রহের অভিযোগ করেন। যদিও পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ভুল নজরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মহিলাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।