মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ লাপিয়েরকে। নিজস্ব চিত্র
তিনি বিদেশি। কিন্তু ভারতের প্রতি তাঁর ছিল কার্যত নাড়ির টান। দেশ এবং ভাষার দূরত্বকে তুচ্ছ করে ফরাসি সাহিত্যিক দোমিনিক লাপিয়ের মিশে গিয়েছিলেন হাওড়ায় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের সঙ্গে। ৯১ বছর বয়সে রবিবার তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে সোমবার শোকপালন করল ওই সংগঠন।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সুকেশী বাড়ুই বলেন, ‘‘শনিবার, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসের রাতে জানতে পারি, দোমিনিক লাপিয়ের অসুস্থ। রবিবার সকালে খবর আসে, তিনি আর নেই। ওঁর উপস্থিতির কথা খুব মনে পড়ছে। ১৯৮০ সালে প্রথম দেখা হাওড়ার পিলখানায়। পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে কাজ করছিলেন। প্রথম দেখাতেই শ্রদ্ধা জন্মায়। সমাজে অবহেলিত শিশুদের নিয়ে আরও বেশি করে কাজ শুরু করি ওঁর অনুপ্রেরণায়।’’
এ দিন উলুবেড়িয়ার কাঠিলায় সংস্থার কার্যালয়ে দোমিনিকের প্রতিকৃতির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কয়েকশো শিশু তাঁকে স্মরণ করে। স্মৃতিচারণ করেন সংগঠনের ডিরেক্টর তথা সুকেশীর ছেলে জন মেরি বাড়ুই। তিনি বলেন, ‘‘তাঁর (দোমিনিকের) আদর্শ মেনে জীবনে চলার চেষ্টা করি। তাঁর অনুপ্রেরণৈতেই ১৯৯৯ সালে মা সংগঠন তৈরি করে। ‘সিটি অব জয় ফাউন্ডেশন’ তৈরি করে আমাদের বহু অর্থ সাহায্য করেছিলেন তিনি। শ্যামপুরের বেলাড়িতে হুগলি নদীর ধারে সংস্থা গড়ে শুরু হয়েছিল সমাজে অবহেলিত শিশুদের মূল স্রোতে ফেরানোর লড়াই।’’
জন জানান, এর পরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১২টি শাখা খোলা হয় সংস্থার। প্রতিটি তৈরির ক্ষেত্রেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ওই ফরাসি লেখক। তিনি বলেন, ‘‘দোমিনিক উলুবেড়িয়ায় আমাদের সংস্থায় বহু বার এসেছেন। শেষ বার এসেছিলেন ২০১১ সালে। সে বার ছেলেমেয়েদের জন্য ফ্রান্স থেকে অনেক খেলনা উপহার এনেছিলেন। প্রতিবন্ধী দিবসে সে দিনের আশি বছর বয়সি মানুষটি ছেলেমেয়েদের নিয়ে নানা খেলায় মেতেছিলেন।’’ ভারত সরকার ২০০৮ সালে দোমিনিককে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করে।