মিলছে না প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন।
প্রায় এক বছর ধরে হুগলিতে হিমোফিলিয়া (রক্ত জমাট না বাঁধা) আক্রান্তদের একাংশের প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন যথাযথ মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই সব রোগীকে কলকাতার হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, রক্তের কিছু উপাদানের তারতম্যের কারণে ওই অসুখকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়। হিমোফিলিয়া-এ এবং হিমোফিলিয়া-বি। হিমোফিলিয়া-এ’তে আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিষেবা যথাযথ মিললেও সমস্যায় ‘হিমোফিলিয়া বি’ রোগীরা।
হুগলিতে দু’টি হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসা হয়। ২০১৮ সাল নাগাদ প্রথমে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল এবং পরের বছর আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়। আরামবাগ মহকুমা হাসাপাতাল এখন আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলের আওতায়।
দুই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় হিমোফিলিয়ার দুই বিভাগ মিলিয়ে রোগীর সংখ্যা অন্তত ৯০। এর মধ্যে ২৩ জন ‘হিমোফিলিয়া বি’ আক্রান্ত। ‘বিরল এবং প্রাণঘাতী’ এই অসুখে আক্রান্তদের অনেককেই এখন কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে ইঞ্জেকশন নিয়ে আসতে হচ্ছে।
চন্দননগরের বাসিন্দা, হিমোফিলিয়া-বি’তে আক্রান্ত কৃষ্ণচন্দ্র দাসের অভিযোগ, “আমরা চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৩ জন ‘হিমোফিলিয়া বি’ রোগী প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন পাচ্ছি না। প্রতি সপ্তাহে দু’টি করে ইঞ্জেকশন নিতে হয়। সে জায়গায় মাসে দু’টি থেকে চারটি করে মিলছে। হাত-পা বেঁকে যাচ্ছে।” একই কথা জানিয়ে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্থানীয় বাতানল গ্রামের সুব্রত সাঁতরার অভিযোগ, “নিয়মিত ইঞ্জেকশন না পেয়ে ইতিমধ্যে আমার হাঁটু, গোড়ালি একেবারেই বেঁকে গিয়েছে। এখন হাসপাতালে কিছু ইঞ্জেকশন এসেছে বলে শুনেছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হিমোফিলিয়া একটি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত রক্ত জমাট না হওয়ার অসুখ। কাটা বা ক্ষত হলে রক্ত গড়িয়ে পড়তে থাকে। এই গুরুতর সমস্যায় যথাযথ চিকিৎসা না হলে রোগীর শরীরের পেশি, গাঁটে বিশেষ ক্ষতির পাশাপাশি মৃত্যুওহতে পারে।