municipal election

নর্দমার উপরে শৌচাগার, বাইরে লাইন মহিলাদের

এই ওয়ার্ড মূলত শ্রমিক মহল্লা। জুটমিলে কাজের সূত্রে বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড প্রভৃতি রাজ্যের লোকজন এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা বনেছেন।

Advertisement

কেদারনাথ ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৫২
Share:

জুটমিল লাগোয়া বাসিন্দাদের শৌচালয়ের চেহারা। নিজস্ব চিত্র।

নর্দমার উপরে টিনের দরজা দেওয়া ছোট ঘর। এটা আসলে শৌচাগার। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে রোজ সকালে মহিলাদের লাইন পড়ে এখানে। ছেলেরা যান স্থানীয় মিল আবাসনের শৌচাগারে। চন্দননগর পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোন্দলপাড়া জুটমিল লাগোয়া বস্তির বাসিন্দারা কী ‘সুখে’ রয়েছেন, তার জলজ্যান্ত প্রমাণ এই শৌচালয়ের চিত্র।

Advertisement

এই ওয়ার্ড মূলত শ্রমিক মহল্লা। জুটমিলে কাজের সূত্রে বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড প্রভৃতি রাজ্যের লোকজন এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা বনেছেন। এখানেই ঘর-সংসার। অনেকেই ভাড়া থাকেন। কেউ থাকেন ঘুপচি শ্রমিক-আবাসনে। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে আড়াই বছরেরও বেশি সময় গোন্দলপাড়া জুটমিল বন্ধ ছিল। এই সময় শ্রমিকরা চরম অর্থকষ্টে ভুগেছেন ভুগেছেন। চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সংসার চালাতে না পেরে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনাও একাধিক ঘটেছে বলে অভিযোগ। মিল বন্ধের প্রভাব পড়েছিল স্থানীয় অর্থনীতিতে। এখন মিল চালু। মানুষ খেয়ে পরে রয়েছেন। কিন্তু নাগরিক পরিষেবা? নাগরিকের বহুলাংশের বিচারে এই বিষয়ে পুরসভা ডাহা ফেল।

রাস্তাঘাট, পানীয় জল, শৌচালয়, নিকাশি, সাফাই কোনও কিছুই আধুনিক হয়নি বলে অভিযোগ। বহু ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের বিবাদ রয়েছে। জীবন-জীবিকার প্রশ্নও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আলাউদ্দিন, অনিল পাসোয়ান, অমর সাউ প্রমুখের বক্তব্য, ‘‘গত বছরের নভেম্বর থেকে গোন্দলপাড়া জুটমিল চালু হলেও, ধুঁকছে। ফের কাজহারা হতে হবে কি না, সেই আতঙ্ক রয়েছে। মাসে ২-৪ কেজি চাল-গমের নিশ্চয়তায় কী হবে? মিলটা সুষ্ঠু ভাবে চলুক।’’

Advertisement

গত পাঁচ বছরে উন্নয়ন বলতে জাতীয় পুর স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে টিনবাজার এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি। শ্রমিক পরিবারের বধূ প্রমিলা মাহাতো, গঙ্গারানি সাউ, অমিতা মাহাতোদের ক্ষোভ, ‘‘বাড়িতে আলাদা শৌচাগার নেই। নর্দমার উপরে শৌচাগারই ভরসা। লজ্জার মাথা খেয়ে ঘরের মেয়ে-বউদের সেখানে লাইন দিতে হয়। মহিলাদের কথা ভেবে পুরসভা অন্তত কমিউনিটি শৌচাগার তৈরি করে দিক।’’

২০০৫ সালে এই ওয়ার্ডে জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থী। গত পুরভোটে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী রাজেশ জয়সোয়ারা বিজেপির বিনোদ দাসকে ২৫০ ভোটে হারান। রাজেশ নিজে গোন্দলপাড়ার শ্রমিক। শ্রমিকদের সমস্যা সম্পর্কে অবহিত। মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত বলে মানছেন তিনি। এ ব্যাপারে শাসক দলের দিকেই উঠছে তাঁর আঙুল। শাসক দল অভিযোগ মানেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement