আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তাদের বাড়ি ঘুরে দেখছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল। বলাগড়ের মহীপালপুর পঞ্চায়েতের কামারপাড়ায়। ছবি: বিশ্বজিৎ মণ্ডল
একদিন আগেই বলাগড়ের দাদপুর গ্রামে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ নিয়ে অনুসন্ধানে আসা ‘ন্যাশনাল লেভেল মনিটরিং’ দলের সদস্যদের শুনতে হয়েছিল ঘর করে দেওয়ার জন্য এক বৃদ্ধার আর্জি।
বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বৃহস্পতিবার সেই বলাগড়েই দ্বিতীয় দিনের পর্যবেক্ষণে নেমে তাঁদের শুনতে হল প্রশ্ন, ‘‘কবে ঘর পাব?’’
বুধবার, প্রথম দিন তাঁরা গিয়েছিলেন বলাগড় ব্লকের ডুমুরদহ নিত্যানন্দপুর-১ এবং সোমরা-২ পঞ্চায়েতে। বৃহস্পতিবার ঘুরলেন এই ব্লকেরই মহীপালপুরে। কেন্দ্রের ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা মহীপালপুর পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ঢোকেন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, সেখানে তাঁরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে আবাস যোজনা প্রকল্প সংক্রান্ত নানা নথি ঘেঁটে দেখেন। দুপুর ২টোর পরে সেখান থেকে বেরিয়ে ছাতা মাথায় তাঁরা যান কামারপাড়া গ্রামে। ১০টি বাড়িতে (আবাস যোজনায় ঘর হয়েছে এমন পাঁচটি এবং তালিকায় নাম রয়েছে, এমন পাঁচটি) যান তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন জেলা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা।
কেন্দ্রীয় দলের জন্য ছাতা মাথায় ঘরের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন কৃষ্ণা সিংহ। স্বামী সঞ্জিৎ ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে টালির চালের মাটির ঘরে থাকেন তিনি। কেন্দ্রীয় দলের এক সদস্য জানতে চান, তাঁরা ঘর পেয়েছেন কি না। কৃষ্ণা হিন্দি বুঝতে না পারায় প্রশাসনের আধিকারিক তর্জমা করে দেন। কৃষ্ণা জানান, ঘর পাননি। মহিলা আরও জানান, স্বামী-স্ত্রী মিলে কৃষি-শ্রমিকের কাজ করেন। আবাসের টাকা পেলে কাঁচা ঘর ভেঙে সেখানেই পাকা ঘর তুলবেন। এর পরেই দম্পতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘সাহেব, কবে ঘর পাব?’’ প্রত্যুত্তরে দিল্লির আধিকারিক জানান, তাঁরা সব তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন। আবাসে ঘর পেয়েছেন, এমন উপভোক্তাদের বাড়িতে গিয়ে তাঁরা জিজ্ঞাসা করেন, প্রকল্পের বরাদ্দ পুরো অর্থ তাঁরা পেয়েছেন কি না।
বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস বলেন, ‘‘আবাস যোজনা প্রকল্পের সমস্ত বিষয় ওঁরা খতিয়ে দেখেন। উপভোক্তাদের বাড়িতেও গিয়েছেন।’’ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সৌরভ বিশ্বাস জানান, আবাস প্লাসে ৯৩৭ জনের তালিকা দেখেন পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা। আবাস প্রকল্পের ঘর হয়েছে, এমন ২০৬ জন উপভোক্তার নামের তালিকা, বরাদ্দ অর্থের পাশাপাশি তাঁরা ১০০ দিনের প্রকল্পের হিসাবে ৯০ দিন হাজিরার টাকা পেয়েছেন কি না, খাতা ঘেঁটে তা-ও দেখেন। উপপ্রধানের দাবি, ‘‘সমস্ত কিছু দেখে সব ঠিকঠাক আছে বলে ওঁরা জানান।’’