জল পেতে এ ভাবেই পাইপে মুখ লাগিয়ে টানতে হয়। ছবি: সুব্রত জানা
জলের পাইপলাইন রয়েছে। দিন নিয়ম করে তিন বার জল আসার কথা। কিন্তু আসে কই! ওই সময়ে গ্রামের মহিলারা কলে পাইপ লাগিয়ে মুখে করে টানলে তখন কিছুটা জল মেলে। নচেৎ নয়।
বছর খানেক ধরে বাগনান-২ ব্লকের মুগবেনাপুর পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা জলকষ্টে ভুগছেন। এ বারও প্রবল গরম পড়া সত্ত্বেও তাঁদের সমস্যার সুরাহা হল না। পানীয় জলের জন্য তাঁদের যেতে হচ্ছে অন্য গ্রামে। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান।
নুন্টিয়া দাসপাড়ার এক গৃহবধূর খেদ, ‘‘বাড়িতে পাইপলাইনের সংযোগ পেতে পঞ্চায়েতে ১৬৫০ টাকা জমা দিতে হয়েছিল। ধার করে সেই টাকা জমা দিই। কিন্তু টাকাটা জলে গেল। সমস্যা মিটল না।’’ আর এক মহিলা বলেন, ‘‘গ্রামের সব পুকুর শুকিয়ে গিয়েছে। বাসন মাজা থেকে গৃহস্থালির প্রাত্যহিক কাজ সারতে খুবই সমস্যা হয়। দিনে যে তিনবার জল পাওয়ার কথা, তখন পাইপলাইনে মুখ লাগিয়ে জোরে টানলে কিছুটা জল পড়ে। তখনই বালতি-হাঁড়ি ভর্তি করে রাখতে হয়। বিষয়টি পঞ্চায়েতে জানিয়েও লাভ হয়নি। জলের কষ্টের জন্য বাড়িতে আত্মীয় এলে ভয় লাগে। এমনকি, কেউ জল চাইলেও সবসময় দিতে পারি না।’’
ওই পঞ্চায়েত এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। পরে সেটি পঞ্চায়েতকে হস্তান্তর করা হয়। পঞ্চায়েত প্রধান শেখ জাব্বর আলির দাবি, ‘‘গরমে জলস্তর নেমে যাওযার জন্য সমস্যা হচ্ছে। পঞ্চায়েত এলাকার উঁচু জায়গায় জলের চাপ থাকছে না, এটা ঠিক কথা। চেষ্টা করা হচ্ছে আরও একটি পাম্প লাগিয়ে কী ভাবে ওই সব জায়গায় জল পৌঁছনো যায়।’’ একইসঙ্গে তিনি জানান, গ্রামের নলকূপগুলি সচল রয়েছে। গ্রামবাসীরা পাইপলাইনের জল না পেলেও নলকূপ থেকেনিতে পারেন।
গ্রামবাসীদের পাল্টা দাবি, নলকূপ দু’একটি রয়েছে। তাতে প্রতিদিনযা লাইন পড়ে, তার চেয়ে অন্যগ্রাম থেকে জল আনা তাঁদের পক্ষে সহজ হয়।