কোলাকুলি: শুভেচ্ছা বিনিময়। শনিবার সকালে গোঘাটের সানবাদিতে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
গত দু’বছরের মতো এ বারও চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ। তবে এ বার সরকারি তরফে কোনও বিধি-নিষেধ নেই। তাই করোনা-আতঙ্ককে সঙ্গী করেই রবিবার ফিরল ইদুজ্জোহার পুরনো ছবি। দুই জেলার ইদগাহ বা মসজিদগুলিতে জমায়েত করে চলল নমাজ-পাঠ। শেষে কোলাকুলিও।
গত দু’বছর প্রশাসনের তরফে কড়াকড়ি ছিল। নিজের বাড়ির ছাদে বা উঠোনে চলেছিল নমাজ পড়া। এ বছর মজসিদ কমিটি থেকেও কোথাও মাইক প্রচার বা মাস্ক বিলি করতে দেখা যায়নি।
তবে চিকিৎসকরা করোনা-সংক্রমণ নিয়ে বারবার সতর্ক করছেন। জোর দিচ্ছেন দূরত্ব-বিধি মানা, মাস্ক পরা ও বারবার হাত ধোওয়ার উপর। সেই কারণেই এ দিন উৎসবের মধ্যেও উদ্বেগে রয়েছেন অনেকে। খানাকুলের কাঁটাপুকুর গ্রামের ইশানপড়ার ইদগাহে নমাজ সেরে স্কুল শিক্ষক মহম্মদ সালেহিন বললেন, “দু’বছর পর গ্রামবাসীরা একসঙ্গে নমাজ পড়ে ভাল লাগছে। তবে ভয়ও লাগছে। আরও একটু সতর্ক থাকার প্রয়োজন ছিল আমাদের। প্রশাসনের তরফেও সতর্ক প্রচার করা হল না।”
গোঘাটের গড়মান্দারণের মহম্মদ রিয়াজুর জামান বলেন, “গত দু’বছর বাড়ির কাছেই মাঠে ১০ জন নমাজ পড়েছিলাম। এ বার গ্রামের ‘ছোট আস্তানা’য় ৫০০ গ্রামবাসী একসঙ্গে নমাজ পড়া হল।” পুরশুড়ার মারকুন্ডা গ্রামের শেখ হাবিব মল্লিক বলেন, “মাস্ক ব্যবহার করিনি। তবে নিজে কিছুটা সচেতন থেকেছি। কোলাকুলি এড়িয়ে গিয়েছি।’’
পান্ডুয়ার কলবাজারের মাদ্রাসার সামনে এবং মেলাতলায় জিটি রোডে চলে নমাজ পাঠ। এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল রাস্তা। মুসলিম সংগঠন আঞ্জুমান ও পান্ডুয়া মাদ্রাসার সম্পাদক হাজি কামরুল হুদা বলেন, ‘‘গত দু’ বছর লকডাউন থাকায় সকলে মিলে নমাজ পড়া যায়নি। তবে এ বছর করোনা-বিধি মেনেই সব কাজ হয়েছে।’’
অবশ্য আরামবাগের তিরোলের হসমত আলির কথায়, ‘‘করোনার সব ডোজ় নেওয়া আছে। তাই খুশির ইদুজ্জোহা সকলকে নিয়ে পালন করেছি। যদি কোলাকুলিই না করতে পারি, তা হলে এত টিকা নিয়ে লাভ কী হল?’’
হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায় এ দিন সকাল সাড়ে ন’টার মধ্যে নমাজ পাঠ শেষ হয়। সাঁকরাইলের বাসিন্দা ফিরোজ শেখ বলেন, ‘‘বছর দু’য়েক পর ইদুজ্জোহায় ফের সেই পুরনো ছন্দে ফিরল পাড়াটা। একসঙ্গে নমাজ পড়ার অভিজ্ঞতাটাই অন্যরকম।’’ হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সকলের কাছেই মাস্ক পরার অনুরোধ করা হয়েছে। অধিকাংশ জায়গাতেই বিধি মানাও হয়েছে।’’