মগরায় জিটি রোড অবরোধ আদিবাসীদের। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচির জন্য গত সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত হুগলির নানা জায়গায় দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তাঘাট কার্যত অবরূদ্ধ থেকেছে। তীব্র দহন দিনে নাকাল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। সপ্তাহের চতুর্থ দিন, বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরুদ্ধ হল কুড়মিদের দাবির প্রতিবাদে আদিবাসীদের আন্দোলনে। রোদে পুড়ে সমস্যায় পড়লেনসাধারণ মানুষ।
কুড়মি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি তালিকাভুক্ত করা যাবে না, এই দাবিতে ২৪টি সংগঠনকে নিয়ে তৈরি ‘ইউনাইটেড ফোরাম অব অল আদিবাসী অর্গানাইজ়েশন’ রাজ্যে বিক্ষোভ-অবরোধের ডাক দেয়। হুগলির পান্ডুয়া, বলাগড়, গোঘাট প্রভৃতি জায়গায় অবরোধ হয়েছে। কোথাও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত, কোথাও সন্ধ্যাতেও। কলেজে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ আরামবাগের পল্লিশ্রী এলাকায় অবরোধে আটকে পড়েন বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থী। এক ছাত্রী প্রতিবাদ করেন। অবরোধকারীদের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। শেষে পুলিশ এসে তাঁদের কলেজে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।
বলাগড়ের ফুলপুকুর বাস স্ট্যান্ডে সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ অসম লিঙ্ক রোড অবরোধ করে ওই সংগঠনগুলির অন্যতম ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’। ওই সড়ক ধরে বহরমপুরে দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ অবরোধে আটকে পড়েন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিনিট দশেক কথা বলেন দিলীপ। তার পরেই তাঁর গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। দিলীপ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বিষয়টি ভেবে দেখবে। ওঁদের সঙ্গে কথা বলা দরকার।’’ অবরোধ ওঠে বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ।
পান্ডুয়ায় কালনা রোড মোড়ে এবং মগরা ও তালান্ডুর মাঝে জিটি রোড অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ অবরোধ শুরু হয়। রাস্তার মাঝে সাঁওতালি নাচ, আলোচনা চলে। অবরোধে যানজট হয়। গলদঘর্ম অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েন মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। অবরোধ চলে বেলা প্রায় সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর পান্ডুয়ার দায়িত্বে থাকা বিপুল হাঁসদা বলেন, ‘‘ঘোষণা ছিল ১২ ঘণ্টা অবরোধের। তবে, সাধারণ মানুষ এবং ভিন্ রাজ্যের গাড়ি চলাচলের কথা ভেবে পাঁচ ঘণ্টাতেই অবরোধ তোলা হয়। রাজ্য সরকারকেআমাদের দাবি না মানলে আন্দোলন বৃহত্তর হবে।’’
সকাল থেকে রাস্তা অবরোধ হয় গোঘাটের কামারপুকুর চটিতেও। গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহু মানুষ সমস্যায় পড়েন। এক যাত্রী বলেন, ‘‘বিশেষ কাজে আরামবাগে গিয়েছিলাম। বাস পাইনি। অটো এবং টোটো করে যেতে হল। ভাড়া গুনতে হল বেশি।’’ আরামবাগের পল্লিশ্রীতে অবরোধের জেরে রাস্তার দু’ধারে সার দিয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে পড়ে।