—নিজস্ব চিত্র।
নিজের বাড়ির বাগানে আবর্জনা পরিষ্কারের করার সময় সাপে কামড়েছিল বৃদ্ধাকে। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে পৌঁছলেন বৃদ্ধার ছেলে। মায়ের সঙ্গে ওই সাপটিকেও বস্তায় ভরে হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। ওই সাপটিকে দেখে যাতে তাঁর মাকে সঠিক ইঞ্জেকশন দেওয়া যায়, সেই কারণেই এমনটা করেছেন বলে জানিয়েছেন পান্ডুয়াবাসী বৃদ্ধার ছেলে। সাপে কাটা মহিলার পরিবারের এই পদক্ষেপকে লাগাতার সচেতনতা শিবিরের ফল বলেই মনে করছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক।
হুগলির পান্ডুয়ার বৈঁচি রায়পাড়ার বাসিন্দা বছর ষাটেকের রেণু রায় জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বাড়ির বাগানে নারকেল গাছের বাকল পরিষ্কার করার সময় বাঁ-হাতের বুড়ো আঙুলে একটি সাপ কামড়ায়। আবর্জনার মধ্যেই একটি সাড়ে তিন থেকে চার ফুটের সাপটি লুকিয়ে ছিল বলে জানিয়েছেন বৃদ্ধা। তিনি বলেন, ‘‘আমি বুঝতেও পারিনি যে, নারকেল গাছের নীচে আবর্জনার মধ্যে একটা সাপ লুকিয়ে রয়েছে।’’ তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান ছেলে বীরু রায়। পরে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় রেণুকে। মায়ের সঙ্গে সাপটিকেও কেন হাসপাতালে নিয়ে এলেন? বীরু বলেন, ‘‘সাপ সমেত মাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। যাতে ওই সাপটিকে দেখে মাকে সঠিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, চিকিৎসায় সুস্থ রয়েছেন বৃদ্ধা।
প্রসঙ্গত, মাস দুই আগে পান্ডুয়া ব্লকের খন্যানের মুলটি গ্রামে এক নাবালিকা সাপের কামড়ে মারা যায়। সাপে কাটার পর হাসপাতালের চিকিৎসায় ভরসা না করে ওঝার ঝাড়ফুঁক-তুকতাকে বিশ্বাস করেছিল তার পরিবার। সেই ঘটনার পর নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন পান্ডুয়া ব্লক প্রশাসন-সহ স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। সাপে কাটা রোগীদের ক্ষেত্রে কী করণীয় তার প্রচারে সচেতনা শিবিরও শুরু হয়। সাপের বিষ রক্তে মিশে শরীরে ছড়িয়ে পড়ার আগেই এভিএস বা অ্যান্টি-স্নেক ভেনম ইঞ্জেকশন দিতে হবে বলে বোঝানো হয় গ্রামবাসীদের। তারই ফল হাতেনাতে মিলছে বলে মত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। পান্ডুয়া হাসপাতালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘‘সাপে কাটা রোগীকে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়ে ঝাড়ফুঁক, তুকতাক মারফত সুস্থ করতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এই কুসংস্কারের বিরুদ্ধে পান্ডুয়ায় সচেতনা শিবির করা হয়েছে। শিবিরগুলির ফলে মানুষজন যে তাতে সচেতন হচ্ছেন, তা বোঝা যাচ্ছে।’’