ফাইল চিত্র।
শহরাঞ্চলে ডেঙ্গি সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এ বার এলাকার পরিস্থিতি জানতে স্থানীয় চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক ডাকল হাওড়া পুরসভা। আগামী সোমবার ওই বৈঠক হবে হাওড়া শরৎ সদনে। পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডের প্রতিটি থেকে দু’জন করে চিকিৎসক উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়াও বৈঠকে থাকবেন পেশায় শিশুরোগ চিকিৎসক তথা হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ পুর স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসকেরা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গোটা হাওড়ায় এখনও পর্যন্ত ২৪৩ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে শুধু হাওড়া শহরেই সংক্রমিতের সংখ্যা ২০০-র বেশি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৩ নভেম্বর পর্যন্ত হাওড়া পুর এলাকায় সরকারি হাসপাতালগুলিতে ভর্তি রয়েছেন ৫১ জন রোগী। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৪৯ জন। হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩।
জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে এখনই ব্যবস্থা না নিলে আক্রান্তের সংখ্যা মারাত্মক হারে বেড়ে যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই মণ্ডল বলেন, ‘‘পুর এলাকায় ডেঙ্গি বাড়ছে। তা নিয়ন্ত্রণে পুরসভার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে কাজ করা হচ্ছে। একাধিক দল তৈরি করে নজরদারি চালানো হচ্ছে ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলিতে।’’
গত ৩১ অক্টোবর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের যোগীন মুখার্জি লেনে ডেঙ্গিতে এক বালিকার মৃত্যুর পরেই নড়ে বসেন পুর কর্তৃপক্ষ। শহরের ২৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গিপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত করে সেখানে ভেক্টর কন্ট্রোল টিম পাঠানো হয়। ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশার লার্ভা ধ্বংস করতে অলিগলিতে গিয়ে কাজ শুরু করে পুরসভার র্যাপিড অ্যাকশন টিম। কিন্তু তার পরেও ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সেই কারণে এলাকার বর্তমান চিত্র জানার জন্য স্থানীয় চিকিৎসকদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে।
পুর চেয়ারপার্সন সোমবার বলেন, ‘‘এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে স্থানীয় চিকিৎসকদের মতামত জানতে এবং কী কী পদক্ষেপ করলে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, তা নিয়ে বিশদে আলোচনার জন্য আমরা প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে দু’জন করে চিকিৎসককে বৈঠকে ডেকেছি। সেই সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে যে তিন জন পতঙ্গবিদ আছেন, তাঁদেরও ডাকা হয়েছে। এর পাশাপাশি সংক্রমণ রুখতে পুর স্বাস্থ্য দফতরের তরফে চলা অভিযান আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ সুজয়বাবু জানাচ্ছেন, যে ২৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গিপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে লার্ভা ধ্বংস করার কাজ দেখতে তিনি নিজে আচমকা পরিদর্শনে যাবেন। যদি দেখা যায় কাজ ঠিক মতো হয়নি, তা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।