বিপত্তি: জমা জল ঠেলে যেতে গিয়ে পড়ে গেলেন এই সাইকেল আরোহী। বৃহস্পতিবার, হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টি। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিপর্যয়ের এই জোড়া ফলায় ফের বেহাল হাওড়ার জনজীবন। কোনায় হাইটেনশন লাইনের ফিডার ‘ট্রিপ’ করে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শহরের বিস্তীর্ণ অংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে যায়। পাশাপাশি, জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় পিলখানা, বেলিলিয়াস রোড-সহ উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় সিইএসসি। তবে রাতেই ফের বিদ্যুৎ সংযোগ চলে আসে।
এরই মধ্যে বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়ে উত্তর ও দক্ষিণ হাওড়ার অন্তত ৩০টি ওয়ার্ড। সেই জল পাম্প করে এক পাড়া থেকে পাশের পাড়ায় ফেলতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। ফলে পাঁচটি পাম্প বন্ধ করে দিতে হয়। যদিও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে একটানা বৃষ্টিতে নতুন করে জলমগ্ন হয় অনেক এলাকা।
বুধবার থেকে সারা রাত বৃষ্টিতে সকালেই বানভাসি হয় উত্তর ও দক্ষিণ হাওড়া। নিকাশি নালা সংস্কারের পরেও দেখা যায় বেশি জল জমে আছে উত্তর হাওড়ায়। সত্যবালা আইডি ও টিএল জয়সওয়ালের মতো কোভিড হাসপাতাল চত্বরেও জল জমে। তবে দু’টি হাসপাতাল চত্বর থেকেই হাওড়া পুরসভা দিনভর পাম্প চালিয়ে জল বার করার চেষ্টা করেছে। হাঁটুজল জমে যায় উত্তর হাওড়ার নস্করপাড়া রোড, বেনারস রোড, জি টি রোড কৃষ্ণভবন, সালকিয়ার ঘোষপাড়ায়। জলবন্দি হয়ে যায় লিলুয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। জল জমে বেলগাছিয়া ভাগাড়, ভট্টনগর, লিলুয়া থানার সামনে, বেলুড় স্টেশন রোড সাবওয়ে, বালির সাঁপুইপাড়া, পাঠকপাড়া এলাকায়।
এ দিন জলমগ্ন অঞ্চল থেকে পাম্প চালিয়ে জল বার করতে গিয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুর ইঞ্জিনিয়ারদের। পুরসভা সূত্রের খবর, জলমগ্ন টিকিয়াপাড়ার দশরথ ঘোষ লেনে তিনটি পাম্প চালিয়ে নিকটবর্তী নোনাপাড়ায় জল ফেলা হচ্ছিল। তখনই নোনাপাড়ার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এর পরে পুরসভা তিনটি পাম্প বন্ধ করে দেয়। উত্তর হাওড়ার শশিভূষণ সরকার লেনেও দু’টি পাম্প চালিয়ে জমা জল সীতানাথ বোস লেনে ফেলা হচ্ছিল। সেখানকার বাসিন্দাদের বিক্ষোভে পাম্প বন্ধ করে দেওয়া হয়। টানা বৃষ্টিতে মধ্য হাওড়ার পঞ্চাননতলা রোড, হৃদয়কৃষ্ণ ব্যানার্জি লেন, কৃত্তিবাস ধারা লেন এবং জগাছার স্টেশন রোড, সাঁতরাগাছি সাবওয়ে ও হসপিটাল রোডও জলবন্দি হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সেই জল নামেনি বলেই খবর।
হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অরূপ রায় বলেন, ‘‘এ বার বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এই সমস্যা হয়েছে। পুরসভা সব ক’টি পাম্প চালিয়ে জল বার করার চেষ্টা করছে। হাওড়ার জমা জলের সমস্যা মেটাতে মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’