এলাকায় পুলিশ। ফাইল চিত্র।
বাগনান গণধর্ষণ কাণ্ডের পর কেটে গিয়েছে দু’সপ্তাহেরও বেশি সময়। অথচ মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কুতুবউদ্দিন মল্লিক এবং যুব সভাপতি দেবাশিস রানা এখনও অধরা। পুলিশ যে চার জনকে ধরেছে, তার মধ্যে তিন জনের নাম এফআইআর-এ নেই। এমনকি,ঘটনার দু’সপ্তাহ পরও নির্যাতিতার কোনও গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে।
হাওড়া গ্রামীণের জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্তদেরও দ্রুত ধরা হবে।’’ আর গোপন জবানবন্দি না নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নির্যাতিতা বাড়িতে নেই। তিনি ফিরলেই গোপন জবানবন্দি
নেওয়া হবে।’’
গত ৭ অগস্ট রাতে বাগনানের এক বিজেপি নেতার বছর চল্লিশের অসুস্থ স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। পরের দিন সকালে মহিলার বড় ছেলে অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন। তাঁকে ভর্তি করানো হয় উলুবেড়িয়া হাসপাতালে।
নির্যাতিতার পরিজনদের অভিযোগ ছিল, বাগনান থানায় অভিযোগ করতে গেলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে অভিযোগ দায়ের হয় উলুবেড়িয়া মহিলা থানায়। নির্যাতিতাকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে দেখতে এসেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ওই নির্যাতিতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
নির্যাতিতার স্বামীর অভিযোগ, ‘‘শারীরিক ভাবে আমার স্ত্রী হয়তো এখন কিছুটা সুস্থ। তবে মানসিক ভাবে নয়। ঘুমের ওষুধেও কাজ হচ্ছে না। মাঝে মাঝেই ঘুমের মধ্যে আঁতকে উঠছে। বাড়ি ফিরতেও ভয় পাচ্ছি। রয়েছি এক আত্মীয়ের বাড়িতে।’’ পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তিনি বলেন, ‘‘এত দিনেও পুলিশ মূল অভিযুক্তদের ধরতে পারল না। এটাই তো বড় প্রহসন!’’
হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপি সভাপতি প্রত্যুষ মণ্ডলের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যতই রাজনীতির রং না দেখে অভিযুক্তদের ধরার কথা বলুন না কেন, তা শুধুই কথার কথা। এফআইআরে যাদের নাম নেই তাদের অকারণে ধরছে পুলিশ। মূল অভিযুক্তরা তো তৃণমূলের লোক। তাদের ধরতে পুলিশ ভয় পাচ্ছে।’’ আমতা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক ও কংগ্রেস নেতা অসিত মিত্র বলেন, ‘‘কেন মূল অভিযক্তরা ধরা পড়ছে না, এটা একটা বড় প্রশ্ন তো বটেই। আশা করব, পুলিশ দ্রুত
ব্যবস্থা নেবে।’’
হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘দুর্নীতি আর অপরাধীদের শাস্তি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়েছেন। বাগনান কাণ্ডেও তার অন্যথা হবে না। দোষীরা অবশ্যই ধরা পড়বে।’’