উলুবেড়িয়া স্টেডিয়াম মাঠে বিধায়ক একাদশ বনাম চেয়ারম্যান একাদশ খেলা হল। করোনা-বিধি শিকেয়। রবিবার। ছবি: সুব্রত জানা।
মাঠে চলছে ফুটবল। গ্যালারিতে তিল ধারণের জায়গা নেই। দেখে কে বলবে, করোনার ভ্রুকুটিতে জনজীবনে নানা বিধিনিষেধ এখনও কার্যকর!
রবিবার বিকেলে এই দৃশ্য হাওড়ার উলুবেড়িয়া স্টেডিয়ামের। বল পায়ে মাঠে নামলেন শাসক দলের বিধায়ক। অতিথি হিসেবে উপস্থিত রইলেন প্রশাসনিক কর্তা থেকে রাজ্যের
মন্ত্রী। অথচ, রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা বলছে, খেলা হতে পারে দর্শকশূন্য মাঠে।
বিষয়টি নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, বিরোধীদের আন্দোলন করোনার দোহাই দিয়ে পুলিশ-প্রশাসন বন্ধ করে দিচ্ছে। আর, দর্শকঠাসা স্টেডিয়ামে শাসক দলের প্রত্যক্ষ মদতে খেলা চলছে। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক শমীককুমার ঘোষ। উলুবেড়িয়া পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসুর সাফাই, ‘‘আজ জাতীয় ক্রীড়া দিবস। তাই, প্রদর্শনী ম্যাচ করা হল। এত দর্শক আসবেন,
ভাবা যায়নি।’’
ম্যাচের আয়োজক উলুবেড়িয়া ভেটারেন্স ক্লাবের সহ-সভাপতি শেখ নকিবুদ্দিনের দাবি, ‘‘প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই খেলা হয়েছে। দর্শকরা সকলেই মাস্ক পরে ছিলেন।’’
ম্যাচে খেললেন মেহতাব হোসেন, রহিম নবি, দেবজিৎ ঘোষ, মানস ভট্টাচার্যের মতো খেলোয়াড়রা।বিদেশ নিজেও খেলেন। ধারাভাষ্য শোনাতে মাঠের বাইরেও মাইক লাগানো হয়েছিল। খেলা শুরু হওয়ার অনেক আগেই কয়েক হাজার মানুষ গ্যালারি ভরিয়ে ফেলেন। দূরত্ববিধি দূরঅস্ত্, বহু দর্শকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। মন্ত্রী পুলক রায়, পুর-প্রশাসক অভয় দাস, মহকুমাশাসক-সহ অতিথির তালিকা ছিল লম্বা। বিধায়ক একাদশ ৪-২ গোলে চেয়ারম্যান একাদশকে হারায়।
দর্শক সমাগম নিয়ে সাধারণ মানুষের একাংশের ক্ষোভ, করোনা সংক্রমণ রুখতে লোকাল ট্রেন চলাচল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুর অনুমতি রাজ্য সরকার দেয়নি। অথচ, সরকারের প্রতিনিধিরাই নিয়ম ভাঙছেন।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপির সভাপতি প্রত্যুষ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘সরকার দ্বিচারিতার মনোভাব নিয়েছে। শাসক দলের লোক মাঠে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত করছেন প্রশাসনের কর্তাদের উপস্থিতিতেই। অথচ, বিরোধীরা নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ করলে মহামারি আইনে মামলা দেওয়া হচ্ছে।’’
সিপিএম নেতা সাবিরুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘শাসক দল নিজেদের ইচ্ছেমতো নিয়ম তৈরি করছে,আবার নিজেরাই ভাঙছে। লোকাল ট্রেন চালু করলে যদি সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে, এ ক্ষেত্রে তা নেই?এটা তা হলে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা নয়!’’