মাটিতে বসেই চলছে পড়াশোনা। বলাগড়ের নিত্যানন্দপুর জুনিয়র বেসিক হাই স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
২০২০ সালে পথচলা শুরু এই বিদ্যালয়ের। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সাত পড়ুয়া ছিল সম্বল। কিন্তু এখন বলাগড়ের নিত্যানন্দপুর জুনিয়র বেসিক হাইস্কুলের পড়ুয়া ঠেকেছে পাঁচে। অভিভাবকদের অভিযোগ, বেহাল পরিকাঠামোর জন্যই তাঁরা এখানে আর সন্তানদের পাঠাচ্ছেন না।
পরিকাঠামোর অভাবগুলি কী কী?
পড়ুয়ারা জানিয়েছে, পাঁচ জনের জন্য বেঞ্চের ব্যবস্থা নেই। মেঝেতে প্লাস্টিক পেতে বসতে হয়। শীতকালে ঠান্ডা লাগে। নেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা। ফলে গরমের সময় গলদঘর্ম হতে হয় তাদের। নেই শৌচালয় ও পানীয় জলের ব্যবস্থা। তাছাড়া এই বিদ্যালয়ে পাঁচ জনের জন্য কোনও মিড ডে মিলের ব্যবস্থা নেই। সেটা পড়ুয়াদের খেতে যেতে হয় ১০০ মিটার দূরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এক অভিভাবক বলেন, ‘‘দু’বোতল জল দিয়ে পাঠাই মেয়েকে। বেশি তেষ্টা পেলে কী করবে? শৌচালয়ের সমস্যাটা বড়। শৌচালয়ের জন্য ওদের তো বাড়িতে আসতে হয়। এমন চলতে পারে না। আর স্কুলের পাশেই ঘন জঙ্গল আছে। সেটাও চিন্তার।’’
আর এক অভিভাবকের বক্তব্য অন্য। তিনি বলেন, ‘‘নবম শ্রেণিতে পড়াশোনার চাপ বেশি। সেই সময় নতুন জায়গায় ভর্তি হওয়া সমস্যার। তাই আমার ছেলেকে পঞ্চম শ্রেণিতেই দু’ কিলোমিটার দূরে গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি। এলাকার অনেকেই তাই করছেন। সে কারণে ওই বিদ্যালয়ে পড়ুয়া কমছে।’’
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন শিক্ষক অসিত ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘অবসর নেওয়ার পর দু’জন অতিথি শিক্ষক হিসেবে রয়েছি। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পড়ুয়া পাঠানোর জন্য বাড়ি গিয়ে অনুরোধ করি অভিভাবকদের।’’
এ বিষয়ে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সোনাক্ষী বিশ্বাস বলেন, ‘‘সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।’’ বিডিও নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ স্কুলকেই নিতে হবে। অন্য বিষয়গুলি দেখা হবে।’’