জল ছাড়া হল মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে। —নিজস্ব চিত্র।
আমনের মরসুমে বৃষ্টির ঘাটতি মেটাতে জল ছাড়া হল মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে। সোমবার থেকে জলাধারের দু’টি মূল ক্যানেলে প্রায় ছ’হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। প্রয়োজনে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছেন জলাধার কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে আপাতত ১০ দিন এই জল ছাড়া থাকবে। আমনের ভরা মরসুমে কংসাবতী ক্যানেলে জল ছাড়ায় বাঁকুড়া জেলা ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলি জেলার কৃষকরা উপকৃত হবেন।
চলতি বছর দক্ষিণবঙ্গে সে অর্থে ভারী বৃষ্টিপাত হয়নি। অগস্টে বৃষ্টির তেমন ঘাটতি না থাকলেও জুন এবং জুলাই মাসে বৃষ্টির প্রায় ৫০ শতাংশ ঘাটতি ছিল বাঁকুড়ার মতো খরাপ্রবণ জেলায়। ফলে রাঢ়বঙ্গের এই জেলায় বহু জমি অনাবাদী রয়ে গিয়েছে। বাঁকুড়ায় চলতি বছর যেখানে তিন লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল, সেখানে ধান রোপণ হয়েছে মাত্র দু’লক্ষ ৭৫ হাজার হেক্টর জমিতে। যে জমিতে আমন রোপণের কাজ হয়েছিল, সেই জমিতেও অগস্টের শেষে জলাভাব তৈরি হয়। মাথায় হাত পড়েছিল জেলার কৃষকদের। পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলি জেলার চাষিদেরও পরিস্থিতি মোটামুটি একই রকম। এই পরিস্থিতিতে তিন জেলার আমন ধানের ফসল বাঁচাতে সোমবার থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংসাবতী সেচ দফতর।
দফতর সূত্রে খবর, সোমবার সকালে ‘লেফট্ ব্যাঙ্ক মেন ক্যানেল’-এ সাড়ে চার হাজার এবং ‘রাইট ব্যাঙ্ক মেন ক্যানেল’— এক হাজার ৬০০ কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। এ বারের বর্ষায় কংসাবতী নদী উপত্যকায় বড় বৃষ্টি হয়নি বলে কংসাবতী এবং কুমারী নদী দিয়ে জমা হওয়া মুকুটমণিপুর জলাধারে জল তুলনামূলক কম। অন্যান্য বছর বর্ষার মরসুমে মুকুটমণিপুর জলাধারে ৪৩০ একর ফুটের আশপাশে জল ধরা থাকত। এ বছর জলের পরিমাণ হয়েছে ৪১৮.৫ একর ফুটের আশপাশে। জলাধারে জল তুলনামূলক কম থাকলেও তিন জেলার হাজার হাজার হেক্টর জমির আমন ধান বাঁচাতে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে কংসাবতী সেচ দফতর।