পুরসভার কলের জল গঙ্গার মতোই ঘোলা। নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার কল থেকে বেরোচ্ছে ঘোলা জল। বাঁশবেড়িয়া থেকে চুঁচুড়া বা শ্রীরামপুর থেকে উত্তরপাড়া— হুগলি জেলার গঙ্গা তীরবর্তী অধিকাংশ পুরসভাতেই রবিবার থেকে দেখা দিয়েছে এই সমস্যা।
গঙ্গার জলে কাদামাটি বেড়ে যাওয়ার জেরেই এই সমস্যা বলে জানা গিয়েছে পুরসভার তরফে। এই জলের উপরেই নির্ভরশীল ওই সব এলাকার অধিকাংশ মানুষ। জল ঘোলা হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতির মোকাবিলায় পদক্ষেপ করেছেন কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়াররা।
গঙ্গার জল তুলে পরিশোধন করা হয় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে। তার পর পাইপ লাইনের মাধ্যমে সেই জল বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হয়। রান্না থেকে স্নান, সব কাজেই পুর এলাকার বাসিন্দাদের নির্ভর করতে হয় এই জলের উপরেই। সেই জল ঘোলা হওয়ায় সমস্যায় সাধারণ মানুষ। সতর্কতা হিসাবে ওই জল পান করতে নিষেধ করা হয়েছে বিভিন্ন পুরসভার তরফে। এ নিয়ে চুঁচুড়ার মালপাড়ার বাসিন্দা দীপা মাল বলেছেন, ‘‘হঠাৎ দেখলাম ঘোলা জল বেরোচ্ছে। প্রথমে ভাবলাম পাম্প পরিষ্কার হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে ঘোলা জল আসায় বুঝলাম, অন্য কোনও সমস্যা হয়েছে। বাড়িতে পুরসভার জলই ভরসা। এখন জল কিনে খেতে হচ্ছে।’’ চুঁচুড়ার বারোয়ারিতলার বাসিন্দা প্রবীর দত্ত বলেছেন, ‘‘এর আগেও বন্যা হয়েছে। কিন্তু পুরসভার জলে সমস্যা হয়নি।’’
এ নিয়ে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার পুর প্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, গঙ্গার জলে কাদা মাটির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় পরিশোধনে সমস্যা হচ্ছে। ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই জল গঙ্গা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গঙ্গার জল অতিরিক্ত ঘোলা হয়ে গিয়েছে। সে জন্যই পরিশোধনে সমস্যা হচ্ছে।’’ পুরসভার নিজস্ব পাম্প চালিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। একই সুর শ্রীরামপুর পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য সন্তোষ সিংহের গলাতেও। তিনি বলেছেন, ‘‘যে ভাবে জলে কাদার পরিমাণ বেড়েছে, সেটা পরিষ্কার করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন। পুরসভার ৪০টি ডিপ টিউবয়েল চালানো হচ্ছে এবং ৩০টি জলের ট্যাঙ্ক নামিয়ে নাগরিকদের পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।’’ সঙ্গে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে জল সরবরাহও বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করেছেন তাঁরা।