মেয়ের মৃতদেহ আগলে বৃদ্ধা। নিজস্ব চিত্র
রবিনসন কাণ্ডের ছায়া হাওড়ায়। প্রায় ১০ দিন ধরে মেয়ের মৃতদেহ আগলে রইলেন মা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার সাক্ষী হলেন হাওড়ার শিবপুর থানার মল্লিকপাড়ার বাসিন্দারা। ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মেয়ের পচাগলা দেহ। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
শিবপুরের মল্লিকপাড়ার বাসিন্দা দীপ্তি মল্লিক (৭০) তাঁর মেয়ে শ্যামলীকে (৪৫) নিয়ে থাকতেন বাড়িতে। মাস দু’য়েক ধরে তাঁরা দু’জনেই অসুস্থ ছিলেন। তাঁদের হাঁটাচলার ক্ষমতা ছিল না। তাঁদের বাড়ির পাশে কয়েক জন আত্মীয়স্বজনও রয়েছেন। কিন্তু দেখাশোনা করা তো দূর অস্ত, কেউ খোঁজখবরও নেননি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। দীপ্তির ভাইয়ের ছেলে শুভদীপ মল্লিক মাঝে মাঝে ওই বাড়িতে খাবার দিয়ে যেতেন। দিন দশেক আগে তিনি ওই বাড়িতে যান। রবিবার ওই বাড়িতে পা রেখে দুর্গন্ধ পান। ঘরে ঢুকে শ্যামলীর পচাগলা দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এও দেখতে পান, মেয়ের মৃতদেহের পাশেই পড়ে রয়েছেন দীপ্তি।
খবর পেয়ে শিবপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় তারা। দীপ্তির কথায়, ‘‘আমাদের কেউ দেখাশোনা করত না। আমার স্বামী একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। বছর তিনেক আগে তিনি মারা গিয়েছেন।’’
শুভদীপের কথায়, ‘‘আমি মাঝে মাঝে এসে খাবার দিয়ে যেতাম।’’ তবে দু’জনকে অসুস্থ অবস্থায় দেখেও কেন চিকিৎসা করানো হল না, এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। কোথাও যে গাফিলতি ছিল তা স্বীকার করে নেন শুভদীপ। প্রায় চার কাঠা জমির ওপর বাড়ি রয়েছে দীপ্তির। সেই সম্পত্তি দখলের জন্য এমন অবহেলা বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।