আদালতের পথে ধৃত শাশুড়ি। নিজস্ব চিত্র।
পারিবারিক অশান্তির জেরে পুত্রবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগে শাশুড়িকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ভদ্রেশ্বরের তেলিনিপাড়ায়। অগ্নিদগ্ধ সঙ্গীতা মাহাতো আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। ধৃতের নাম রামপতি মাহাতো। অপর অভিযুক্ত, রামপতির মেয়ে পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অগ্নিদগ্ধ মহিলার মেয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে রামপতিকে ধরা হয়েছে। রামপতির মেয়ের খোঁজ চলছে।’’
রামপতিদের বাড়ি তেলেনিপাড়ার এফজি স্ট্রিটে। সেখানে রামপতি ছাড়াও তার স্বামী, দুই ছেলে-বৌমা এবং তাঁদের সন্তানরা থাকেন। মেয়ে পুতুলের বিয়ে হয়েছে চন্দননগরে। তবে, সে-ও বাপের বাড়িতে থাকে। অভিযোগ, যাবতীয় সম্পত্তি মেয়েকে পাইয়ে দেওয়ার জন্য রামপতি ছেলে-বৌমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যা থেকে মাহাতো বাড়িতে ঝগড়া হচ্ছিল। অভিযোগ, রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ নাতনি স্মৃতির সামনেই মেয়ের সঙ্গে মিলে রামপতি দুই বৌমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়। বিপদ বুঝে ছোট বৌমা কোনও রকমে সরে যান। সঙ্গীতার গায়ে জ্বলন্ত দেশলাই কাঠি ছুঁড়ে দেয় রামপতি।
দুই বৌমার চিৎকারে পড়শিরা চলে আসেন। পুতুল পালায়। সঙ্গীতাকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর শরীরের প্রায় চল্লিশ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। স্মৃতি ভদ্রেশ্বর থানায় পিসি এবং ঠাকুমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে রামপতিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার চন্দননগর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
স্মৃতি বলেন, ‘‘আমাদের যৌথ সম্পত্তি পিসিকে পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঠাকুমা মা-কাকিমার উপরে মানসিক অত্যাচার করত। বাবা-কাকা প্রতিবাদ করলে আমাদের নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলত। সোমবার আমার সামনেই ঠাকুমা আর পিসি মা-কাকিমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে যেয়। কাকিমা পালিয়ে যেতে পারলেও মা পারেনি।’’