নিশ্চিন্দার আনন্দনগরের দুই গৃহবধূ এবং সাত বছরের শিশুর নিখোঁজ রহস্যের কিনারা সোমবারই করে ফেলেছে পুলিশ।
নিশ্চিন্দার আনন্দনগরের দুই গৃহবধূ এবং সাত বছরের শিশুর নিখোঁজ রহস্যের কিনারা সোমবারই করে ফেলেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ জানতে পেরেছে, গত সপ্তাহে বুধবার শীতের পোশাক কিনতে বেরিয়ে দুই গৃহবধূ মুর্শিদাবাদে সুভাষ ও শেখর নামে দুই পরিচিতের কাছে চলে যান। মাস ছয়েক আগে কর্মকার বাড়িতেই রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এসেছিলেন সুভাষ ও শেখর। এ বার এলাকাবাসীদের বয়ানে ও পুলিশ সূত্রে উঠে এল আরও কিছু নতুন তথ্য।
কর্মকার বাড়িতে কাজ করতে আসার পরই সুভাষ ও শেখরের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ তৈরি হয়েছিল বাড়ির বড় বউ অনন্যা কর্মকার ও তাঁর জা রিয়া কর্মকারের। পরে ধীরে ধীরে প্রণয়ের সম্পর্কও গড়ে ওঠে তাঁদের মধ্যে। এ বার পুলিশ সূত্রে জানা গেল, অনন্যা ও রিয়ার কাছে আগে কোনও মোবাইল ফোন ছিল না। সুভাষ প্রথম ফোন কিনে দিয়েছিলেন অনন্যাকে। ওই ফোনেই দুই জা সুভাষ ও শেখরের সঙ্গে ‘গল্প’ করতেন। এলাকাবাসীদের একাংশের দাবি, সুভাষ ও শেখরের সঙ্গে অনন্যা ও রিয়াকে এক সঙ্গে একাধিক বার পাড়ায় ঘুরতেও দেখেছেন তাঁরা। তবে তাঁরা যে এই ভাবে হঠাৎ ‘উবে’ যাবেন, তা তাঁরা আশা করেননি।
১৫ ডিসেম্বর বেলা ১২টা নাগাদ শীতের পোশাক কেনাকাটা করতে বাড়ি থেকে বেরনোর পর থেকে আর সন্ধান মেলেনি বধূ অনন্যা কর্মকার, তাঁর জা রিয়া কর্মকার এবং রিয়ার সাত বছরের ছেলে আয়ুশ কর্মকারের। এর পরই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করে কর্মকার পরিবার। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, নিখোঁজদের শেষ মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন শ্রীরামপুরের রয় এমসি ভাদুড়ি লাহিড়ী স্ট্রিট। যদিও সেখানে কারও হদিশ পাওয়া যায়নি। এর পর নিখোঁজদের কল লিস্টের সূত্র ধরেই মিলেছে সাফল্য।
কল লিস্ট খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, নিখোঁজ হওয়ার দিন একটি অচেনা নম্বর থেকে বেশ কয়েক বার ফোন এসেছিল কর্মকার পরিবারের বড় বধূ অনন্যার ফোনে। ওই নম্বরটি ছিল সুভাষের। এর পরই রবিবার মুর্শিদাবাদের সুতি এলাকায় সুভাষের বাড়িতে অভিযান চালায় নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। সেখানে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, দুই গৃহবধূ মুর্শিদাবাদে আসার এক দিন পরেই তাঁরা সকলে মুম্বই চলে গিয়েছেন। আপাতত মুম্বইয়ে তাঁদের বর্তমান অবস্থান জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। মায়ানগরীতে একটি বিশেষ দলও পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে খবর।